বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নওগাঁয় প্রস্তুত ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোরবানির পশু

  •    
  • ২৮ জুন, ২০২২ ২১:৫৫

জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা মহির উদ্দীন বলেন, ‘ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে নওগাঁ জেলায় খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে ৪ লাখ ৩৩ হাজার গবাদিপশু প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে শুধু গরুই ৬৭ হাজার। জেলায় প্রায় ২৫ হাজারের মতো খামার রয়েছে। গত বছর ২ লাখ ২৫ হাজার কোরবানি হয়েছিল। এবারে জেলায় প্রায় ৩ লাখের বেশি কোরবানি হবে বলে ধারণা করছি।’

ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে নওগাঁয় খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে ৪ লাখ ৩৩ হাজার গবাদিপশু প্রস্তুত রয়েছে। এসব পশুর মধ্যে রয়েছ— ষাঁড়, বলদ, গাভি (বাচ্চা উৎপাদনে অক্ষম) মহিষ ও ছাগল।

জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, নওগাঁ সদরে ৪২হাজার ৪২০টি, রাণীনগরে ৪১ হাজার ৭৪১টি, আত্রাইয়ে ২৪ হাজার ৭৮৩টি, ধামইরহাটে ৪৪ হাজার ৮২৫টি, বদলগাছীতে ৩২ হাজার ৩৭৯টি, নিয়ামতপুরে ৩২ হাজার ৯৬টি, পোরশায় ৩৩ হাজার ৪৩৬টি, সাপাহারে ২৮ হাজার ৭৬৬টি, মহাদেবপুরে ৪২ হাজার ৫৮৯টি, পত্মীতলায় ৪৬ হাজার ৮১০টি এবং মান্দায় ৬৩ হাজার ২২৮টি গবাদি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।

জেলার বেশ কয়েকটি খামার ঘুরে দেখা যায়, ঈদ উপলক্ষে ভালো দামের আশায় খামারিরা পশু লালন-পালন করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। খরচ বেশি হলেও ভালো দাম পাবেন বলে আশা খামারিদের।

অন্যদিকে ভারতীয় গরু যেন দেশে প্রবেশ যেন না করতে পারে তারও দাবি জানিয়েছেন তারা।

কী বলছেন খামারিরা

নওগাঁ সদর উপজেলার মৃধাপাড়া এলাকার সজিব অ্যাগ্রোর মালিক সজিব হোসেন বলেন, ‘আমার খামারে ৯০টি গরু রয়েছে। গরুগুলোকে লালন-পালন ও পরিচর্যা করে ক্রেতার মনের মতো করে তুলছি। আগামী সপ্তাহ থেকে গরু বাজারে বিক্রি শুরু করব।’

সজিব আরও বলেন, ‘১০মাস আগে গরুগুলো কিনেছি মোটাতাজা করে বিক্রির জন্য। প্রতিটি গরু ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকায় কিনেছি। প্রতিদিন প্রতি গুরুর জন্য খাবার বাবদ খরচ হয় ৩০০ টাকার মতো।

‘প্রতিটি গরু ২ লাখ থেকে ২ লাখ ১০ বা ১৫ হাজার টাকার মতো দামে বিক্রি হবে বলে আশা করছি। যদি এই দামে বিক্রি করতে পারি তবে সব খরচ বাদ দিয়ে গরু প্রতি ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকার মতো লাভ হবে।’

রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের খামারি রফিকুল আলম বলেন, ‘আমার খামারে ১০টি গরু ও ৫টি ছাগল আছে। ১ বছর আগে এসব গরু ও ছাগল কিনেছিলাম। গরুগুলো ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকায় কিনেছিলাম। আর ছাগলগুলো ৭ থেকে ৮ হাজার টাকায় কিনেছিলাম।

‘ভালো দাম পাবার আশায় পরিচর্চা করে যাচ্ছি। গো খাদ্যের দাম কিছুটা বেশি। প্রতিদিন গরু ও ছাগলের জন্য তিলের খইল, ভুসি, চালের গুড়া, ছোলা, লবন ও ঘাস খাওয়াতে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকার মতো খরচ হয়ে যায়। ভালো দাম পেলে প্রতিটি গরু ৮০হাজার থেকে ১ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারব। তাহলে গরু প্রতি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা লাভ হবে। আর ছাগল ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হলে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকার মতো লাভ হবে প্রতিটি ছাগল বিক্রি করে।

রফিকুলে আশা ভারতীয় পশু না ঢুকলে ভালো দাম পাওয়া যাবে। এজন্য প্রশাসনের কঠোর নজরদারি দাবি করেন তিনি।

মান্দা উপজেলার মৈনম গ্রামের খামারি সিদ্দিক হোসেন বলেন, ‘ঈদুল আযহা উপলক্ষে ৫টি গরু প্রস্তুত আছে। গরু গুলোকে লালন-পালন করছি ১০ মাস ধরে। নওগাঁর সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে প্রতি বছরই ঈদের আগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী গরু আনার চেষ্টা করে। আবার অনেকে নিয়েও আসে।

‘ভারতীয় পশু যেন দেশে না ঢুকতে পারে সেদিকে প্রশাসন যেন নজর দেয়। তাহলে আমরা ভালো দাম পাবো বলে মনে করছি। নইলে লোকশান হয়ে যাবে। কারণ ভারতের পশু দেশে এলে দাম কমে যাবে গরুগুলোর। তখন আমাদের লোকশান হতে পারে।’

জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা মহির উদ্দীন নিউবাংলাকে বলেন, ‘ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে নওগাঁ জেলায় খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে ৪ লাখ ৩৩ হাজার গবাদিপশু প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে শুধু গরুই ৬৭ হাজার। জেলায় প্রায় ২৫ হাজারের মতো খামার রয়েছে। গত বছর ২ লাখ ২৫ হাজার কোরবানি হয়েছিল। এবারে জেলায় প্রায় ৩ লাখের বেশি কোরবানি হবে বলে ধারণা করছি।

‘জেলায় কোরবানির জন্য পশুর সংকট হবে না। চাহিদার তুলনায় জেলার খামারগুলোতে পশু বেশি থাকায় এবার অন্য কোথাও থেকে পশু আনার প্রয়োজন নেই।’

জেলা প্রাণীসম্পদের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘পশুগুলোকে মোটাতাজা করার জন্য কোনো ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ বা ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে না। সেদিকে আমাদের নজর রয়েছে। মাঠের সবুজ ঘাস, ভুসি, খইল, চালের গুড়া, ছোলা খাওয়াচ্ছেন। আর পশুকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সুস্থ রাখতে আমরা খামারিদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।’

এ বিভাগের আরো খবর