নড়াইলে পুলিশের সামনে শিক্ষকের গলায় জুতার মালা দিয়ে অপদস্ত করার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। সরেজমিন তথ্যানুসন্ধান করে কমিটিকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (জনসংযোগ দফতর) মো. আতাউর রহমান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘২৬ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২৮তম সিন্ডিকেট সভায় স্বপন কুমার বিশ্বাসকে লাঞ্ছিত করার ঘটনা আলোচনা হয় এবং নিন্দা প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান। কমিটিকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কেউ দোষী চিহ্নিত হলে তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ফেসবুকে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মার সমর্থনে কলেজের এক হিন্দু শিক্ষার্থীর পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে গত ১৮ জুন দিনভর বিক্ষোভ, সহিংসতা চলে নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে। গুজব ছড়িয়ে দেয়া হয় ওই শিক্ষার্থীর পক্ষ নিয়েছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস।
এরপর পুলিশ পাহারায় বিকেল ৪টার দিকে স্বপন কুমার বিশ্বাসকে ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে দাঁড় করিয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় একদল ব্যক্তি। শিক্ষক স্বপন কুমার হাত উঁচিয়ে ক্ষমা চাইতে থাকেন। পরে তাকে তুলে নেয়া হয় পুলিশের গাড়িতে।
মোবাইল ফোনে ধারণ করা এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। পুলিশের সামনে শিক্ষকের এমন অপদস্ত হওয়ার ঘটনায় তৈরি হয়েছে তীব্র ক্ষোভ।
ফেসবুকে ভাইরাল ভিডিওতে শিক্ষক স্বপন কুমারের গলায় জুতার মালা পরানোর সময় আশপাশে পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেলেও তারা এখন দাবি করছে, এমন কোনো ঘটনা তাদের চোখে পড়েনি। ঘটনার ৯ দিনের মাথায় এ ব্যাপারে মামলা করেছে পুলিশ। স্বপন কুমারকে জুতার মালা পরানোয় সরাসরি জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্যও জানিয়েছে পুলিশ।