বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ইভিএম নিয়ে সিদ্ধান্ত সামর্থ্যের পর্যালোচনার পর: সিইসি

  •    
  • ২৮ জুন, ২০২২ ১৯:৩৮

সিইসি বলেন, ‘আমরা ইভিএমের অন্ধ গ্রাহক ছিলাম না। সব আলোচন  লিপিবদ্ধ করেছি। আমাদের সামর্থ্য কতগুলো তা দেখব। এরপর সিদ্ধান্ত নেব। সম্পূর্ণ বা ফিফটি ফিফটি করব কি-না সে সিদ্ধান্ত নেব।’

আগামী জাতীয় নির্বাচনে ভোট গ্রহণে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম ব্যবহার নিয়ে নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শেষ করেও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানালেন না প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।

বলেছেন, দলগুলোর মতামত তারা লিপিবদ্ধ করেছেন। কতগুলো আসনে ইভিএমে ভোট নেয়ার সামর্থ্য আছে, সেটি পর্যালোচনা করবেন, এরপর সিদ্ধান্ত নেবেন।

মঙ্গলবার আওয়ামী লীগসহ ১০ দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপর শেষে এই কথা জানান সিইসি। আগের দুই দফার মতো এই পর্বেও আমন্ত্রণ পেয়েও কয়েকটি দল সংলাপে আসেনি। তৃতীয় দফায় এই সংখ্যাটি ৪।

নিবন্ধিত ৩৯টি দলের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণ রক্ষা করে ইভিএম যাচাই করতে আসে মোট ২৮টি দল।

আলোচনার সূচনা বক্তব্যে সিইসি বলেন, ‘আমরা যখন দায়িত্ব নেই, কিছুদিন পর থেকেই ইভিএম নিয়ে কথাবার্তা পত্রপত্রিকায় চাউর হয়েছিল। আমাদের শুরুতে ইভিএম সম্পর্কে সে রকম ধারণা ছিল না। আমাদের ব্যক্তিগত ধারণাও ছিল না। আমরা ইতোমধ্যেই ইভিএম নিয়ে অনেক কাজ করেছি। এখন আমাদের মোটামুটি ধারণা আছে।

তিনি বলেন, ‘এর আগে আমরা দুটি সংলাপ করেছি। অনেকেই কিন্তু ইভিএমের পক্ষে বলেছেন। অনেকে সলুশন দিয়ে বলেছে, আরও উন্নত প্রযুক্তিসহ ইভিএম যদি ক্রয় করা যায় তাহলে আর ভালো হয়। আবার অনেকে সরাসারি বলেছেন, তারা ইভিএমে নির্বাচনে যাবেন না। আমরা আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেব। কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন করবো সেটা আমাদেরকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

সিইসি বলেন, ‘আমরা ইভিএমের অন্ধ গ্রাহক ছিলাম না। সব আলোচন লিপিবদ্ধ করেছি। আমাদের সামর্থ্য কতগুলো তা দেখব। এরপর সিদ্ধান্ত নেব। সম্পূর্ণ বা ফিফটি ফিফটি করব কি-না সে সিদ্ধান্ত নেব।’

আগামী জাতীয় নির্বাচনে সনাতন পদ্ধতির পাশাপাশি ভোটগ্রহণে ইভিএম ব্যবহার করা হবে কি না, এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভক্তি আছে। বিএনপি এবং তার জোটের শরিকদের ধারণা, ইভিএমে ভোট কারচুপি করা যায়। তাই তারা ব্যালটের ভোটের পক্ষে।

অবশ্য বিএনপি এবং সমমনারা বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনেই না আসার ঘোষণা দিয়েছে।

সিইসি অবশ্য মনে করে, ইভিএম দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ বা হ্যাকিং সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘ইভিএমের সঙ্গে ইন্টারনেটের কোনো সম্পর্ক নাই বিধায় হ্যাকিংয়ের কোনো সম্ভাবনা নাই।’

এই বিষয়টি নিয়ে নানা গুজব নিজেও শুনেছেন এবং এক সময় বিশ্বাসও করতেন বলেও জানান সিইসি। বলেন, ‘গুজব শুনতে খুব ভালা লাগে। আমার জীবনও ওভাবে কেটেছে। এখন যখন আমাকে নিয়ে কথা শুনি সেগুলো কিন্তু সত্য না। অথচ আমি আগে এভাবেই গুজবই বিশ্বাস করতাম। আসলে মানুষের স্বভাবটাই হচ্ছে গুজবটা খুব শুনতে ভালো লাগে।’

নির্বাচনের কর্মপদ্ধতি ঠিক করতে আবার সংলাপ

আগামী জাতীয় নির্বাচনের কর্মপদ্ধতি ঠিক করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবার আলোচনায় বসার আগ্রহের কথাও জানান সিইসি। বলেন, ‘ঈদের পরপরই আগস্ট থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করব, তখন সকল নিয়ে আলোচনা করব।

তিনি জানান, ভোট নিয়ে তাদের বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য নেই। বলেন, ‘আমরা কিন্তু কোনো বাজে মতলব নিয়ে আসিনি বা আমাদের কোনো পক্ষ থেকে এই ধরনের কোনো আশ্বাসও কেউ দেন ননি। কোনো রাজনৈতিক চাপ আমাদের ওপর নেই।

‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, সেই সময় (নির্বাচনকালীন সরকার) সরকার থাকবে কিন্তু আওয়ামী লীগ থাকবে না। সরকার আর আওয়ামী লীগ এক না। আমরা সরকারের কাছে আমরা হেল্প নেব, আওয়ামী লীগের কাছ থেকে কোনো হেল্প নেবো না। প্রশ্নই আসে না।

‘কাজেই আমরা বিশ্বাস করি, সরকার এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে যে বিভাজনটা আছে, সেই বিভাজনইটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমি ‍উচ্চারণ করতে শুনেছি। উনি এ ব্যাপারে খুবই স্পষ্ট, সরকারের তরফে থেকে আমাদেরে সহায়তা দেয়া হবে।’

নির্বাচন কমিশন সেই সহায়তা পাওয়ার অধিকারী জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘যে সহায়তা আমরা প্রাপ্য, সেই সহায়তা আমাদের দিতে হবে। সেই সহায়তা যদি দেয়া না হয়, সুন্দর ইলেকশন হয়ত হবে না।’

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যের কামনাও করছেন সিইসি। বলেন, ‘নির্বাচন মাঠে সবাই থাকবেন। বিভিন্ন পার্টির উপস্থিতি কিন্তু এক ধরনের ভারসাম্য সৃষ্টি করে নির্বাচনের মাঠে।

সংলাপে কাদেরকে পেয়ে অভিভূত

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আসা প্রতিনিধি দলে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের থাকবেন- এটা ভাবতে পারেননি সিইসি। বলেন, ‘আজকে আপনারা বড় বড় দলের অনেকেই এসেছে। মাননীয় মন্ত্রী স্বয়ং নিজেই এসেছেন, যেটা আমি প্রত্যাশাও করেনি। আপনি এসেছেন আপনাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ।’

আওয়ামী লীগ নেতাকে উদ্দেশ করে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা আশা করব, আপনারা সরকারে থেকে আমাদেরকে সরকারি সাহায্য সহায়তা দেবেন। আমরাও যে সহায়তা চাইব, তাও সাগ্রহে প্রদান করবেন।’

এ সময় কাদের বলেন, তারা নির্বাচনে কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা করবেন।

তখন সিইসি বলেন, ‘যাক আপনি বলেছেন, এজন্য আমরা আশ্বস্ত বোধ করছি এবং এই আশ্বাসটা নিয়ে আমরা আগামীতে কাজ করে যাব। নির্বাচনের মাঠে এটা একটা সামগ্রিক একটা বিষয়, রাজনৈতিক নেতৃত্বের সামষ্টিক একটা বিষয়। কাজেই আমাদের ওপর ছেড়ে দিলে হবে না।’

সংলাপে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব, মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত থাকায় আরেক কমিশনার রাশিদা সুলতানা উপস্থিত ছিলেন না।

এ বিভাগের আরো খবর