বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মোবাইল হাতিয়ে নিতে কৌশলে ডেকে বন্ধুকে খুন

  •    
  • ২৮ জুন, ২০২২ ১৬:২৪

পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত কিশোরের মোবাইল হাতানোর উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন কারণে। তার এক বান্ধবীর সঙ্গে শারিরীক সম্পর্কের জন্য অর্থের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তার কাছে দ্রুত এ টাকা যোগাড় করতে পারেনি অভিযুক্ত ছেলেটি। এ জন্য এই পথ বেছে নেয়। মোবাইল বিক্রির সূত্র ধরে জাকিয়া খাতুন বৃষ্টি নামে ওই তরুণীকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মোবাইল হাতিয়ে নেয়ার জন্য সপ্তম শ্রেণির কিশোর নওফেলকে খুন করে তারই বন্ধু। খুনের অভিযোগে নওফেলের বন্ধুকে গ্রেপ্তারের পর এসব বিষয় জানতে পারে পুলিশ।

এক সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে এসব কথা জানান বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী।

গত ২০ জুন সন্ধ্যায় বগুড়ার শাজাহানপুরের দাড়িগাছা ফুলবাড়িয়া এলাকায় নওফেল শেখের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে ১৮ জুন থেকে সে নিখোঁজ ছিল।

১৪ বছরের নওফেল একই এলাকার ইসরাইল শেখের ছেলে এবং দাড়িগাছা ইসলামী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

মরদেহ উদ্ধারের পরপরই পুলিশ তদন্তে নামে। তদন্তে তার বন্ধুর সংশ্লিষ্টতা বেরিয়ে আসে। গতকাল সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকার টঙ্গী পশ্চিম থানা এলাকা থেকে অভিযুক্ত ওই কিশোরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় জাকিয়া খাতুন বৃষ্টি নামে এক তরুণীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২০ বছরের জাকিয়া খাতুন বগুড়ার শেরপুরের বাসিন্দা।

জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার বলেন, ‘১৮ জুন নওফেলের জন্মদিন ছিল। ওই দিন তার বাবা ইসরাইল ১৮ হাজার টাকার একটি স্মার্টফোন উপহার দেন। সেই মোবাইল নিয়ে নওফেল ওই ঘনিষ্ট বন্ধুর সাথে বাড়ি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে একটি জঙ্গলে যায়। মূলত এ জঙ্গলে এসে তারা ধূমপান করত।’

পুলিশ সুপার জানান, এ সময় অভিযুক্ত কিশোর পরিকল্পনা অনুযায়ী সঙ্গে একটি মাফলার নিয়েছিল। জঙ্গলে গিয়ে ‍ধূমপানের ফাঁকে মাফলার গলায় প্যাচাঁনোর একটি গল্প শুরু করে ওই কিশোর। কিন্তু বন্ধু হওয়ায় নওফেল এসবের কারণ বুঝতে পারেনি।

এরই একপর্যায়ে নওফেলের গলায় মাফলার দিয়ে প্যাঁচ দিয়ে পেছন থেকে টান দেয়। এতে কিছুক্ষণ ছটফট করে নওফেল মারা যায়। পরে পাশে থাকা একটি বাঁশ দিয়ে মাথায় পরপর দুবার আঘাত করে অভিযুক্ত কিশোর। মৃত্যু নিশ্চিত হলে সেখানে আরও প্রায় ১৫ হাত দূরে ঝোপের ভিতরে নওফেলের মরদেহ টেনে নিয়ে গিয়ে গুম করে।

পরে মরদেহ উদ্ধার হলে ওই কিশোর সবার অগোচরে পালিয়ে যায়। পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত কিশোরের মোবাইল হাতানোর উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন কারণে। তার এক বান্ধবীর সঙ্গে শারিরীক সম্পর্কের জন্য অর্থের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তার কাছে দ্রুত এ টাকা যোগাড় করতে পারেনি অভিযুক্ত ছেলেটি। এ জন্য এই পথ বেছে নেয়। মোবাইল বিক্রির সূত্র ধরে জাকিয়া খাতুন বৃষ্টি নামে ওই তরুণীকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এসপি সুদীপ কুমার বলেন, 'নওফেলের মোবাইল হাতিয়ে নিয়ে অভিযুক্ত কিশোর জাকিয়া খাতুনের সঙ্গে দেখা করে। পরে তারা দুজনে শহরের সাতমাথায় একটি দোকানে গিয়ে ওই মোবাইল ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে।

'বিক্রির টাকা নিয়ে তারা দুজনে শহরের গালাপট্টিস্থ হোটেল টুইন ব্রাদার্সে রুম ভাড়া করে সময় কাটায়। ওই কিশোরের আরেক বন্ধুও সেখানে এসে মেয়েটির সঙ্গে সময় কাটায়। পরে মেয়েটিকে দেড় হাজার টাকা দিয়ে অভিযুক্ত কিশোর চলে যায়।'

জেলা পুলিশ সুপার জানান, তদন্তে প্রথমে মোবাইল উদ্ধার করা হয়। সেই সূত্র ধরে মেয়েটিকে এবং পরে টঙ্গী থেকে অভিযুক্ত কিশোরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার কিশোরের দেখানো স্থান থেকে হত্যায় ব্যবহৃত মাফলারও উদ্ধার করা হয়েছে।

সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, 'গ্রেপ্তার তরুণী কারাগারে রয়েছে। আর অভিযুক্ত কিশোরকে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার জন্য পাঠানো হয়েছে।'

এ বিভাগের আরো খবর