জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক ছাত্রের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতির ছেলের গাড়িচালককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তসহ কয়েকজনকে অজ্ঞাত করে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী চালক নজরুল ইসলাম।
সোমবার রাতে মামলা করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবীর হোসেন হাওলাদার।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম কৌশিক সরকার সাম্য। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের (১৪ ব্যাচ) শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইনের অনুসারী।
মারধরের শিকার নজরুল ইসলাম রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের ছেলে রিয়াদ আহমেদ তুষারের গাড়ির চালক।
গত রোববার ওয়ারীতে জবির শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম হলের কাছে অভিযুক্তকে সাইড দিতে বলায় ঘটনার সূত্রপাত হয়। সেখানে মারধরের পর আবার চালককে হলে নিয়েও মারধর করা হয়।
অভিযুক্ত কৌশিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্যানেলের কর্মী বলে জানা গেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে জানা গেছে, সাম্য নিজেকে শাখা ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ফেসবুকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেনের সঙ্গে তার ছবি ছাড়াও নিয়মিত ছাত্রলীগকেন্দ্রিক পোস্ট শেয়ার করতে দেখা যায়।
শাখা ছাত্রলীগের একাধিক নেতাও সাম্যকে সংগঠনটির কর্মী হিসেবে নিশ্চিত করেছেন।
তবে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসাইন অভিযুক্ত ছাত্রলীগের কেউ নয়, এমনকি তার কর্মী নন বলে জানান।
তিনি দাবি করেন, ‘আমি নেতৃত্বে আসার পর এ ছেলে কখনও আমার সঙ্গে রাজনীতি করেনি। জগন্নাথে পাঁচ-ছয় হাজার শিক্ষার্থীর সঙ্গে আমাদের ছবি থাকতে পারে, তাই বলে এরা সবাই তো ছাত্রলীগ করে না।’
মামলার বিষয়ে ওসি কবীর হোসেন হাওলাদার বলেন, ‘গত পরশুর ঘটনা। রাষ্ট্রপতির ছেলের গাড়িচালক নজরুল ইসলাম গাড়ি ঘোরাচ্ছিলেন, ছেলেটা সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল। ড্রাইভার বলছেন ছেলেটার গায়ে লাগেনি, হর্ন দিয়েছিলেন সরে যাওয়ার জন্য। ছেলেটা প্রথমে চালককে থুথু দেন, তারপর মারধর করেন। পরে আবার সৈয়দ নজরুল ইসলাম হলে নিয়ে গিয়ে চার-পাঁচজন মিলে মারধর করে চালককে। সোমবার সন্ধ্যার পর মামলা হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করব। এরপর পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। থানার সাথে আমার কথা হয়েছে। গাড়ির চালক মহামান্য রাষ্ট্রপতি স্যারের ছেলের গাড়িচালক বলে থানা জানিয়েছে।’
২০১৯ সালে অভিযুক্ত কৌশিক সরকার সাম্য সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার হয়েছিলেন।