চট্টগ্রামে মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসম্পাদক সাইফুল ইসলামকে তার চার সহযোগীসহ আটকের কথা জানিয়েছে পুলিশ। তবে ছাত্রদল নেতাকে কোন জায়গা থেকে কখন আটক করা হয়েছে তা নিয়ে পাওয়া গেছে ভিন্ন বক্তব্য।
পুলিশের ভাষ্য, পাঁচলাইশ থানার রহমত নগর এলাকা থেকে সোমবার রাত সোয়া ১২টার দিকে তাদের আটক করে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫টি ছুরি উদ্ধার করা হয়।
তবে সাইফুলের পরিবারের দাবি, চট্টগ্রাম আদালতে হাজিরা দিতে গেলে সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে থেকে তাদের ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। সকালে সাংবাদিকদের মাধ্যমে আটকের বিষয়টি জানতে পারেন তারা।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দীন মজুমদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাত সোয়া ১২টার দিকে রহমত নগর এলাকা থেকে চার সহযোগীসহ সাইফুলকে আটক করা হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫টি ছুরি উদ্ধার করা হয়।
আটকরা ওই এলাকার কে ব্লকে নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন দাবি করে তিনি বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে মামলার পর মঙ্গলবার আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হবে।’
সাইফুলের বিরুদ্ধে মারামারি, বিশেষ ক্ষমতা আইন ও অস্ত্র আইনে নগরীর বিভিন্ন থানায় ১৪টি মামলা রয়েছে বলেও জানান ওসি।
সাইফুলের ভাই মো. সবুজ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এক বছর আগে ২১ সালের ১৬ জুন পুলিশ তাকে (সাইফুল) গুলি করে পঙ্গু করে ফেলে। আগের তো রাজনৈতিক মামলা আছেই, তখন নতুন মামলাও দেয়। সে মামলায় দেড় মাস আগে জেল থেকে ৬ মাসের জামিনে মুক্তি পান।
‘সোমবার পুরাতন মামলায় সাইফুল হাজিরা দিতে গিয়েছিল আদালতে। আমিও সঙ্গে গিয়েছিলাম। তখন আমি ওপরে ছিলাম কাজে। সাইফুল ভাইসহ অন্যরা নিচে ছিল। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নিচে নেমে দেখি ওরা আর নাই। পরে লোকজনকে জিজ্ঞেস করে শুনি পুলিশ সিভিলে এসে ওদের আটক করে নিয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাতে আমার মা পাঁচলাইশ থানায় গিয়ে খোঁজ নেয়, কিন্তু পুলিশ তখন আটকের বিষয়টি স্বীকার করেনি।’
তবে এ বিষয়ে ওসি বলেন, ‘থানায় অনেক মানুষ আসে। রাতে তারা আসছিল কি না সেটা বলতে পারি না।’
২০২১ সালের ১৬ জুন রাতে নায়েজিদ লিংক রোড থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সাইফুলকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। সে সময় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) মুখপাত্র অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (ডিবি-দক্ষিণ) শাহ মো. আব্দুর রউফ দাবি করেছিলেন, এশিয়ান ওম্যান ইউনিভার্সিটির গেইট এলাকায় অস্থায়ী চেক পোস্টে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালান সাইফুল। পুলিশ পাল্টা গুলি চালালে সাইফুল গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় পুলিশের ৩ সদস্যও আহত হন। পরে সাইফুলকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়।
তবে সেসময় নিউজবাংলার কাছে সাইফুলের ভাই সবুজ দাবি করেছিল, সাইফুলকে অক্সিজেন এলাকা থেকে ১৬ জুন দুপুরে সুস্থ অবস্থায় আটক করেছিল বায়েজিদ থানা পুলিশ।