ঢাকার সাভারে হাইওয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে হয়রানি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে পাঁচ দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন থ্রিহুইলার যানের শ্রমিকরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াকে কেন্দ্র করে সড়কে অগ্নিসংযোগসহ বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করেন তারা। এতে আহত হয়েছেন পুলিশের এক সদস্য ও রিকশা শ্রমিকসহ অন্তত ১৫জন।তবে হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে চাঁদাবাজি ও হয়রানির অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করা হয়েছে।
সোমবার সকাল ১১টার দিকে আশুলিয়ার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পলাশবাড়ী এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন পাঁচ শতাধিক থ্রি হুইলার শ্রমিক। প্রায় ২ ঘণ্টা সড়ক অবরোধের পর আশুলিয়া থানা পুলিশ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম কামরুজ্জামান নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
রিকশাচালক জিল্লুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। আমার পেটে চারটা অপারেশন। দুই সাওয়াল নিয়া ফ্যামিলি আমার। রিকশা চালানো ছাড়া কোনো কাজ করতে পারি না। হাইওয়ে পুলিশ রিকশা ধইরা ৫ হাজার করে ট্যাকা করে নেয়। নিয়া খাতাত (খাতায়) ২০০০ ট্যাকা লিখে দেয়। আমরা ঋণ কইরা (করে) সেই ট্যাকা দেই। মাঝে মধ্যে থানার ভেতর থাইকা আমাগো গাড়ি আবার চুরি কইরা বেইচাও দেয়।’
আনিছুর রহমান নামে আরেক চালক বলেন, ‘হাইওয়ে পুলিশ আমাদের গাড়ি ধরে ট্যাকা নেয়, মারধর করে। গত ১৩ তারিখেও আমি ৫২০০ ট্যাকা দিয়া রিকশা ছাড়ায় আনছি। ভেতরের রাস্তা থাইকাও পুলিশ রিকশা নিয়া ধইরা নিয়া যায়। আইজ আমাদের দাবি নিয়া আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করছিলাম। কিন্তু পুলিশ আচমকা আইসা লাঠিচার্জ করে আমাদের ১২-১৪ জনের মতো আহত করছে। আমাদের বেশ কয়েকজনকে ধরেও নিয়ে গেছে পুলিশ।’
বিক্ষোভকারীদের দাবিগুলো হলো, অটোরিকশা ও ভ্যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, পুলিশি হয়রানি ও চাঁদাবাজি বন্ধ, থ্রি হুইলার চলাচলের জন্য আলাদা লেন ও স্ট্যান্ড নির্মাণ ও থ্রি হুইলার চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান।
সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সড়কে চলা থ্রি হুইলারের বিরুদ্ধে আমার নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করি। এরই জেরে শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে নানা কথা বলছে। আমরা থ্রি হুইলার আটক করে ২৫০০ টাকার মামলা দেই। ইউক্যাশের মাধ্যমে চালকরা তা পরিশোধ করেন। ইউক্যাশের চার্জসহ ২৬০০ টাকা হয় জরিমানা। আর একি চালক দুইবার জরিমানার আওতায় এলে তখন সরকারি ভাবেই সেই টাকার পরিমাণ ৫০০০ হয়।’
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম কামরুজ্জামান বলেন, ‘এরা হাইওয়ে রোডে রিকশা চালাতে চায়। কিন্তু এরা হাইওয়েতে রিকশা চালাতে চায়। শ্রমিকদের ছোড়া ইটের আঘাতে আমাদের এক পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। তাকে হাসপাতালে প্রাথমিক ভর্তি করা হয়েছে।
‘তবে চাঁদাবাজি না। হাইওয়ে পুলিশ না কি তাদের ডিস্টার্ব করে এজন্যই তারা সড়কে নেমেছে। আমি তাদের আশ্বস্ত করেছি, এধরণের কোন অভিযোগ পেলে আমি ব্যবস্থা নেব। বর্তমানে সড়কের পরিস্থিতি স্বাভাবিক। আমরা কাউকে আটকও করিনি।’