নড়াইলে পুলিশের সামনে শিক্ষকের গলায় জুতার মালা দিয়ে অপদস্ত করার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক শিক্ষক ও মুক্তিযোদ্ধা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত অবস্থান নেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক জি এইচ হাবীব এবং মুক্তিযোদ্ধা ও বামপন্থি কর্মী আব্দুল হক। এ সময় তাদের হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘আমিও স্বপন কুমার বিশ্বাস’।
ফেসবুকে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মার সমর্থনে কলেজের এক হিন্দু শিক্ষার্থীর পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে গত ১৮ জুন দিনভর বিক্ষোভ, সহিংসতা চলে মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে। গুজব ছড়িয়ে দেয়া হয় ওই শিক্ষার্থীর পক্ষ নিয়েছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস।
আরও পড়ুন: পুলিশের সামনে শিক্ষকের গলায় জুতার মালা কীভাবে?
এরপর পুলিশ পাহারায় তাকে ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে দাঁড় করিয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় একদল ব্যক্তি। শিক্ষক স্বপন কুমার হাত উঁচিয়ে ক্ষমা চাইতে থাকেন। পরে তাকে তুলে নেয়া হয় পুলিশের গাড়িতে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জি এইচ হাবীব বলেন, ‘সম্প্রতি নড়াইলে যে ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে, স্বপন কুমার বিশ্বাসকে যেভাবে হেনস্তা করা হয়েছে তার প্রতিবাদে আমরা দাঁড়িয়েছি। শিক্ষক হিসেবে মনে হয়েছে আমার এটা প্রতিবাদ করা দরকার। একটু দেরিই হয়ে গেল বোধ হয়, আরও আগেই দাঁড়ানো দরকার ছিল। আমার পাশে মুক্তিযোদ্ধা ও বামপন্থি কর্মী আব্দুল হক সাহেব দাঁড়িয়েছেন।’
মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হক বলেন, ‘ধর্ম ব্যবহার করে আমাদের দেশের মানুষকে বোকা বানানো সহজ। ধর্মকে কেউ কেউ স্বার্থে ব্যবহার করে। এতে ক্ষমতাসীনদের ইন্ধন থাকে।’
শিক্ষক হেনস্তার এ ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। পুলিশের সামনে শিক্ষকের এমন অপদস্ত হওয়ার ঘটনায় তৈরি হয়েছে তীব্র ক্ষোভ।
ঘটনার পর থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন স্বপন কুমার বিশ্বাস। প্রশাসনের দাবি, তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে নিউজবাংলাকে স্বপন কুমার জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহে তিনবার ঠিকানা বদল করেছেন তিনি।