বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সীমান্তে ফেনসিডিল কারখানা ধ্বংস করেছে ভারত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

  •    
  • ২৬ জুন, ২০২২ ১৬:১২

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ‘এ কারণে আমরা সীমান্তে বিজিবিকে শক্তিশালী করছি, আমাদের কোস্টগার্ডকে শক্তিশালী করছি। এই মাদক যাতে দেশে না ঢুকতে পারে, সেদিকে নজরদারি করছি। আমরা সীমান্ত এলাকায় সেন্সর বসানোর ব্যবস্থা করছি, যাতে কেউ এলে বা গেলে তার অস্তিত্ব আমরা টের পাই।’

মাদক চোরাচালান বন্ধে বাংলাদেশের অনুরোধে সীমান্তের আশপাশের ফেনসিডিল কারখানা এরই মধ্যে ধ্বংস করেছে ভারত। তবে এখনও যেসব কারখানা আছে, সেগুলো ধীরে ধীরে ধ্বংস করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

তিনি বলেছেন, প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে ভয়ংকর যেসব মাদক আসছে, সেগুলো রোধে ভারতের সঙ্গে প্রতিনিয়ত আমাদের যোগাযোগ রয়েছে। আমরা তাদের সব সময় অনুরোধ করছি এবং আমাদের অনুরোধে তারা ফেনসিডিল কারখানা সরিয়ে নিয়েছে।

রোববার দুপুরে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমাদের পাশের দেশ মিয়ানমার, যেখান থেকে ভয়ংকর মাদকগুলো আসে। সেই ড্রাগগুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নিয়েছি, তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি, আমাদের ডিজি সঙ্গে তাদের ডিজির আলাপ হচ্ছে, আমরা তাদের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। মিয়ানমারকে যখন আমরা অবহিত করি তখন তারা বোঝেন, পরে আর কিছু করেন না।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ‘এ কারণে আমরা সীমান্তে বিজিবিকে শক্তিশালী করছি, আমাদের কোস্টগার্ডকে শক্তিশালী করছি। এই মাদক যাতে দেশে না ঢুকতে পারে, সেদিকে নজরদারি করছি। আমরা সীমান্ত এলাকায় সেন্সর বসানোর ব্যবস্থা করছি, যাতে কেউ এলে বা গেলে তার অস্তিত্ব আমরা টের পাই।’

মাদকের চোরাচালান ও অপব্যবহার বর্তমান বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের উন্নত-অনুন্নত সব দেশই আজ এ সমস্যায় আক্রান্ত। আমাদের দেশ মাদক উৎপাদনকারী দেশ না হয়েও ভৌগোলিকভাবে বিশ্বের প্রধান দুটি মাদক উৎপাদনকারী বলয়ে অবস্থিত হওয়ায় এটি মাদক চোরাচালানের রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে দেশের উল্লেখযোগ্য অংশ, বিশেষ করে যুব সমাজের একটি অংশ মেধা ও কর্মশক্তি হারিয়ে ফেলে পরিবার ও সমাজের বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

‘মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সারা বিশ্বে যেভাবে কাজ করে, আমরাও ঠিক সেভাবে কাজ করি। সাপ্লাই হ্রাস, ডিমান্ড হ্রাস ও হার্ম হ্রাস এই তিন পদ্ধতিতে আমরা কাজ করে থাকি।’

মাদক যখন কেউ গ্রহণ করা শুরু করে দেয়, সেটা থাকে কৌতূহলবশত উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমে তারা সিগারেটে এক-দুই টান দেয়। এক-দুই টান দিতে দিতেই কোন দিন যে চেইন স্মোকার হয়ে যায় সেটা তার অজান্তেই হয়ে যায়। তার পর শুরু করে দুই এক ছিলিম গাঁজা দিয়ে। তার পরে সে যে উল্কার মতো চলে, সে নিজেও বুঝতে পারে না। আমরা হার্ম হ্রাসের জন্য এসব ড্রাগ অ্যাডিক্টেডের খুঁজে বেড়াই।

‘আমাদের কাছে যে পরিসংখ্যান রয়েছে, বাংলাদেশে প্রায় ৭৫ থেকে ৮০ লাখ মাদকাসক্ত রয়েছে। কারও কারও পরিসংখ্যানে আরও বেশি। মোট মাদকাসক্তের মধ্যে ৪৮ শতাংশ শিক্ষিত। মাদকাসক্তদের মধ্যে ৫৭ শতাংশ আবার যৌন অপরাধী। জেলখানায় যত মানুষ আছে, এর বেশির ভাগই মাদক পাচারকারী কিংবা কারবারি। এটা বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে, আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে মাদকসেবীদের ৮০ শতাংশই যুবক।’

তিনি বলেন, আমরা সরকারিভাবে বলেছিলাম প্রকাশ্যে কেউ ধূমপান করতে পারবে না। এখনও কিন্তু এটা মেনে চলছে। সমীক্ষা বলছে, ৮ শতাংশ ধূমপায়ী কমেছে কিন্তু আমার মনে হয় আরও কমেছে। সবাই মিলে কাজ করলে আমরা এখান থেকে পরিত্রাণ হতে পারব।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশকে মাদকাসক্ত মুক্ত করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি সামনে রেখে আমরা কাজ করছি। পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাব, কোস্টগার্ড, আনসার ও ভিডিপির পাশাপাশি নোডাল এজেন্সি হিসেবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে আরও শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

‘ইতোমধ্যে অধিদপ্তরের সাংগঠনিক কাঠামো পরিবর্তন করা হয়েছে। জনবল বৃদ্ধি করা হয়েছে। মাদক অপরাধীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনার জন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ এবং অন্যান্য বিধিমালা যুগোপযোগী করে সংশোধন করা হয়েছে। অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা-২০২২ প্রণয়ন করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের অফিসগুলোতে লজিস্টিক সাপোর্ট বাড়ানো হয়েছে। এদিকে চারটি বিভাগীয় শহরে টেস্টিং ল্যাব নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।’

১৯৮৭ সালে জাতিসংঘের ৪২তম অধিবেশনে ২৬ জুনকে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ১৯৮৮ সাল থেকে সারা বিশ্বে দিনটি পালন হয়ে আসছে। এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘মাদক সেবন রোধ করি, সুস্থ সুন্দর জীবন গড়ি’।

এ বিভাগের আরো খবর