জাজিরা প্রান্ত দিয়ে প্রথম বাস হিসেবে পদ্মা সেতু পার হয়েছে ইমাদ পরিবহনের একটি বাস; এমন ঘটনার সাক্ষী হতে পেরে উচ্ছ্বসিত বাসের চালক ও যাত্রীরা। আবেগ, অনুভূতি আর আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তারা।
সব থেকে বেশি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন গাড়িটির চালকের সহযোগী মজিবুর মিয়া। তিনি সেতু পার হওয়ার পর গাড়ি থেকে নেমে হাত উঁচু করে লাফাতে থাকেন। মনে হয় যেন পর্বত জয় করলেন।
এ সময় মজিবুর বলেন, ‘আমার জীবন ধন্য হয়ে গেছে।’
রোববার সকাল ৬টার দিকে সেতু চালুর পর জাজিরা প্রান্ত থেকে সেতুতে ওঠে যাত্রীবাহী ইমাদ পরিবহন। খুলনা থেকে ছেড়ে আসা বাসটির চালক মো. হানিফ টোল প্লাজায় টোল পরিশোধ করে ‘আনন্দের সীমা নাই’ বলে চিৎকার করেন।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে আমার পক্ষ থেকে অনেক অনেক স্যালুট।’ এ সময় গান গেয়ে হানিফ বলেন, ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি, জন্ম দিয়েছ মাগো, বড় বেশি ভালোবাসি।
‘আমরা আমরা করবো জয়। আমরা করবো জয় একদিন... ’
তিনি বলেন, ‘মনে করি নাই বাঁইচা থাকতে পদ্মা সেতুতে গাড়ি চালাইয়া যাইব। আমার অনেক খুশি লাগতাছে। আমাদের সব ড্রাইভারের পক্ষ থেকে হাজারবার স্যালুট।’
এ সময় যাত্রীরা সমস্বরে চিৎকার করে আনন্দ প্রকাশ করেন। এক যাত্রী বলেন, ‘সেতু চালু হওয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত।’
তিনি বলেন, ‘আমার বন্ধু আসছে দুবাই থেকে, ওকে নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছি।’ আরেক যাত্রী বলেন, ‘রাত দেড়টা থেকে সেতুতে ওঠার অপেক্ষায় ছিলাম। সবার আগে উঠতে পেরেছি, এ জন্য নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে করছি। এটা ছিল আমার সৌভাগ্য। টোল প্লাজায় লাইনে প্রথম ঢুকেই আমি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছি।’
খুলনা থেকে আসা ইমাদ পরিবহনের যাত্রী সিয়াম বলেন, ‘প্রথম বাস হিসেবে পদ্মা সেতুতে উঠেছি। এই অনুভূতির ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। আমরা ইতিহাসের অংশ হয়েছি। বাসে করে সেতু পার হব, এটা কল্পনাও করিনি।’
আরেক যাত্রী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। বহু রাত্রী আমরা মাওয়াতে নদীর পাড়ে কাটিয়েছি। বহু ছেলে মায়ের মৃত্যুর খবর শুনে রওনা দিয়ে ঘাটে বসে রাত কাটিয়েছে। অনেক রোগী এই ঘাটে থেকেই অ্যাম্বুলেন্সে মারা গেছে। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। দেশবাসীর পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা।’
পদ্মা সেতু বরিশালের জন্য একটি গর্বের বিষয় উল্লেখ করে আরেক যাত্রী সুমন বলেন, ‘এখন আমাদের ঢাকায় যাওয়া সহজ হয়েছে।’