অবশেষে শুরু হলো পদ্মা সেতু দিয়ে যান চলাচল। রোববার সকাল ৬টার দিকে যান চলাচলের জন্য সেতুর দুই প্রান্তের দ্বার খুলে দেয়া হয়। এতে সীমাহীন উচ্ছ্বাস দেখা যায় যাত্রীদের মধ্যে।
প্রথমবারের মতো পদ্মা সেতু পারাপারের জন্য অনেকেই গভীর রাত থেকে শরীয়তপুরের জাজিরা টোল প্লাজার সামনে এসে অপেক্ষা করতে থাকেন। নির্ধারিত সময়েই সেই অপেক্ষার পালা শেষ হয়।
জীবনে প্রথমবারের মতো পদ্মা সেতু পারাপারের আনন্দ অনেকের উল্লাসে ফুটে উঠেছে। দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন ছুটে এসেছেন কালের সাক্ষী হতে। উচ্ছ্বাস করতে দেখা গেছে তাদের।
দীর্ঘদিনের নদীপথের ভোগান্তির শেষ হিসেবে পদ্মা সেতুকে সক্ষমতার প্রতীক হিসেবে দেখছেন যাত্রী ও পরিবহনচালকরা। নির্ধারিত মূল্যে টোল দিয়ে সেতু পার হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাধারণ মানুষের মধ্যে ছিল উৎসব। অনেকেই মোটরসাইকেল নিয়ে পদ্মা নদী পার হচ্ছেন। তবে গণপরিবহনের আগেও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের পরিবহন আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতু পারাপার হয়।
মাগুরা থেকে আসা দোলা পরিবহনের চালক আতিয়ার হোসেন বলেন, ‘রাত ৯টা থেকে অপেক্ষায় ছিলাম কখন পদ্মা পারি দেব। অবশেষে সেই অপেক্ষার পালা শেষ হলো। খুব ভোরেই টোল প্লাজার সামনে হাজির হলাম। টোলও দিয়েছি। আল্লাহর নামে চললাম। দীর্ঘদিন ধরে ফেরিতে যে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে তার সমাপ্ত হলো আজ।’
মোটরসাইকেলে করে বাগেরহাট থেকে আসা রিপন ফরাজী বলেন, ‘অনেক ইচ্ছা ছিল প্রথমে পদ্মা সেতু পার হব, তাই রাতেই আসছি। সর্বপ্রথম পার হচ্ছি দাবি করব না, তবে আমার আগে কোনো মোটরসাইকেল আজ পার হয়নি।
প্রশাসন বা অন্য কোনা দপ্তরের মোটরসাইকেল আগে পার হয়ে থাকতে পারে। আমি সর্বপ্রথম পার হয়েছি বলেই মনে হচ্ছে।’
সার্বিক পরিবহনের চালক ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ‘আমাদের ঈদের মতো খুশি লাগছে। যে দুর্ভোগ ঘাটে পোহাতে হয়েছে, তা থেকে মুক্তি মিলল। আমাদের কয়েকটি নতুন বাস সড়কে নামানো হয়েছে।
‘নতুন গাড়ি আর আত্মীয়-স্বজন নিয়ে প্রথমবারের মতো পদ্মা সেতু পার হচ্ছি। এ এক ভিন্ন মজার অভিজ্ঞতা। কালের সাক্ষী হয়ে রইলাম আমরা। নতুন প্রজন্ম দেখবে, কিন্তু আমরা সেটার শুরু করলাম।’
শনিবার দুপুর ১২টার একটু আগে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২১ জেলার সড়ক পথের সঙ্গে নতুন দিগন্ত সূচিত হলো।