বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পদ্মা সেতু চালুতে পিরোজপুরে ঘটবে কৃষিবিপ্লব

  •    
  • ২৫ জুন, ২০২২ ২০:৫৩

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, পদ্মা সেতু চালু হলে জেলার সাতটি উপজেলার প্রায় ছয় লাখ কৃষক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে লাভবান হবেন।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু রূপ নিয়েছে বাস্তবে। আগামী ২৬ জুন জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হবে প্রতীক্ষিত এ সেতু।

এতে পিরোজপুরে কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণে সুবিধা হবে ব্যাপক। তাই আশায় বুক বেঁধেছেন পিরোজপুর জেলার কৃষকরা।

তাদের আশা, সেতুর কারণে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় সবজি, ফল, ফুল, পানসহ কৃষিপণ্যর ভালো দাম পাওয়া যাবে। পাশাপাশি লাভবান হবেন ব্যবসায়ীরাও।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, পদ্মা সেতু চালু হলে জেলার সাতটি উপজেলার প্রায় ছয় লাখ কৃষক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে লাভবান হবেন।

কৃষিভিত্তিক ও কৃষিনির্ভর দক্ষিণের জেলা পিরোজপুর। এ জেলার প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ কৃষি ও মৎস্য পেশার সঙ্গে জড়িত। পিরোজপুরে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী ভাসমান সবজি, পেয়ারা, মাল্টা, আমলকী, আম, ধান, পান, সুপারিসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য।

এতদিন ভালো যোগাযোগব্যবস্থার সমস্যার কারণে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করে যা অর্থ পান তা দিয়ে পুরো বছর ঠিকমতো চলতে পারেন না। ফেরির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকায় গাড়িতেই নষ্ট বা পচে যেত তাদের পণ্য। যার সুযোগ নেয় মধ্যস্বত্বভোগীরা। বিশেষ করে পচনশীল পণ্য কম দামে ছেড়ে দিতে হয় কৃষকদের।

পদ্মা সেতু চালু হলে খুব কম সময়েই পণ্য বাজারজাত করা যাবে। এতে সরাসরি লাভবান হবেন কৃষকরা।

পিরোজপুর সদরের জুজখোলা গ্রামের কৃষক মনির হোসেন বলেন, ‘আমি সারা বছরই কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত থাকি। আমার ক্ষেতে সিজনাল ফল হয়। আমার মাল্টা, আম, তরমুজ ও কলা ক্ষেত আছে। প্রতি বছর ক্ষেত থেকে ফসল তোলার সময় বাধে বিপত্তি।

‘কারণ বেপারিদের (মধ্যস্বত্বভোগী) সঙ্গে দাম নিয়ে তৈরি হয় সমস্যা। সঠিক দাম পেতাম না। তবে এখন পদ্মা সেতু চালু হচ্ছে। এখন আর বেপারিদের কাছে ছুটতে হবে না। নিজেই নিজের পণ্য ঢাকা পাঠাতে পারব। তাতে লাভও হবে বেশি।’

আরেক চাষি মিলু মোল্লা বলেন, ‘গত বছর শীতে পানের দাম নিয়ে অনেক ধরা খাইছি। আমার বরজ থেকে যেই দামে পান কিনে নিয়ে বিক্রি করা হয়েছে তার অনেক কম লাভ আমাকে পাঠিয়েছে বেপারিরা। তাই তখন যোগাযোগব্যবস্থা ভালো থাকলে নিজেদের এলাকার ট্রাকে মাল পাঠাতে পারতাম।’

তরমুজ চাষি ইদ্রিস আলী বলেন, ‘প্রতি বছর আমার ক্ষেতের তরমুজ বেচাকেনা নিয়ে শঙ্কায় থাকি। মৌসুমের শুরুতে দাম চড়া হলেও কিছুদিন পর দাম পড়ে যায়। ফলে লাভবানের চেয়ে ক্ষতিটা বেশি হয়।

‘সঠিক সময়ে তরমুজ ঢাকায় পৌঁছাতে না পারলে দাম পাওয়া নিয়ে হয় বিভিন্ন সমস্যা। যা-ই হোক, এখন পদ্মা সেতু হয়েছে, এখন আর চিন্তা নাই। পণ্য আর নষ্ট হবে না। সকালেই ঢাকা চলে যাবে।’

পিরোজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম সিকদার ও জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল বারী নিউজবাংলাকে জানান, পদ্মা সেতুটি যেমন কৃষকদের স্বপ্ন দেখাচ্ছে, সেই সঙ্গে স্বপ্ন দেখছেন মৎস্যজীবীরাও। কৃষির পাশাপাশি ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে জেলার মৎস্য খাতেও।

পিরোজপুরের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ মৎস্যজীবী পেশার সঙ্গে জড়িত। পদ্মা সেতুর কারণে কৃষি ও মৎস্য এই দুই খাতে বিপ্লব ঘটবে দাবি তাদের।

তারা আরও জানান, পদ্মা সেতু দেশের যোগাযোগব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কৃষি, শিল্প, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক উন্নয়ন ঘটাবে। তবে বেশি সুবিধা পাবেন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার কোটি মানুষ।

আর জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা নকীব বলেন, ‘পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে পিরোজপুর সদরে ইতোমধ্যে গড়ে উঠছে বেশ কিছু সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়িক স্থাপনা। সেই সঙ্গে দিন দিন বাড়ছে রাস্তার পাশের জমির দামও। আগামীতে বড় বড় ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠবে এবং বিনিয়োগ করবে এই জনপদে, ঘুচবে বেকার সমস্যা।’

এ বিভাগের আরো খবর