দেশের বহুল কাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে উৎসবে মেতে ছিলেন টাঙ্গাইলের কারাবন্দিরা।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে স্মরণীয় করে রাখতে টাঙ্গাইল কারাগারে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উন্নতমানের খাবার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি। জেল সুপার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ-আল-মামুনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল হাশেম, টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ।
জেলা প্রশাসন ও কারাগার কর্মকর্তারা জানান, পদ্মা সেতুর উৎসবের আনন্দ সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে টাঙ্গাইল কারাগারের সব বন্দির মধ্যে উন্নতমানের খাবার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
কারাগারের দেড় সহস্রাধিক বন্দির মধ্যে উন্নতমানের খাবার দেয়া হয়। টাঙ্গাইল শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীসহ কারাগারের বন্দিরা পদ্মা সেতু নিয়ে নিজেদের লেখা গান পরিবেশন করেন।
কারাবন্দি শহরের কলেজপাড়া এলাকার বাবু খন্দকার বলেন, ‘তিন বছর ধরে টাঙ্গাইল কারাগারে আছি। পারিবারিক বা সামাজিক অন্যান্য মানুষের মতো ভালো খাবার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। আনন্দের সময় জেলা প্রশাসনও আমাদের কারাবন্দিদের যে মনে রাখছে এতে আমরা খুব খুশি।’
মাদক মামলার আসামি ঘাটাইল সদর উপজেলার জুয়েল রানা বলেন, ‘চার মাস ধরে টাঙ্গাইল কারাগারে আছি। এতদিন নিজেকে অপরাধী বা কারাবন্দি মনে হলেও আজ নিজেকে স্বাধীন মনে হচ্ছে। খুব আনন্দ উপভোগ করতে পারছি।’
মধুপুরের মোস্তফা কামাল বলেন, ‘পদ্মা সেতু উপলক্ষে কারাগারে উন্নতমানের খাবার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানাই। তাদের প্রতি আমরা কারাবন্দিরা কৃতজ্ঞ।’
জেল সুপার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত দিয়ে পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন হয়েছে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সুপারের সহযোগিতায় কারাগারে বিশাল আয়োজন হওয়ার জন্য আমি গর্বিত। এতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে আমি ধন্যবাদ জানাই। জেলখানায় উৎসবের আয়োজন হয়েছে।
‘বন্দিরা করোনাভাইরাসের কারণে দুই বছর এত বড় আয়োজন কখনও দেখেনি। করোনার পর কারাগারে এটাই বড় আয়োজন। ১ হাজার ৪৯৩ বন্দির জন্য আয়োজন ছিল। ইতিপূর্বে খাবারের মান যাচাই করার জন্য একটু খেতাম। আজ বন্দিদের সঙ্গে খাবার খেতে পেরে আমরাও খুব আনন্দিত।’
জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি বলেন, ‘পদ্মার সেতুর আনন্দ থেকে যাতে কেউ বাদ না পড়ে সে জন্যই জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে টাঙ্গাইল কারাগারে উন্নতমানের খাবার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কারাবন্দিদের সঙ্গে আমরা অতিথিরাও খাবার খেয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিয়েছি।’