বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বন্যায় মৃত্যু নিয়ে সুনামগঞ্জের ডিসির বক্তব্য অসত্য, দাবি বিএনপির

  •    
  • ২৫ জুন, ২০২২ ১৮:২৩

‘সুনামগঞ্জে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা চলাকালীন ভীতিকর পরিস্থিতিতে সরকারি কোনো সহযোগিতা ছাড়াই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটেছে বানভাসি মানুষ। বন্যায় সরকারি-বেসরকারি ভবন, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল তো বটেই, ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিটি বহুতল ভবন পরিণত হয় এক একটি আশ্রয়কেন্দ্রে।’

ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সুনামগঞ্জ জেলাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। সেই সঙ্গে বন্যায় মৃত্যু নিয়ে জেলা প্রশাসকের বক্তব্য বিভ্রান্তিকর ও অসত্য বলে দাবি দলটির।

শহরের পুরাতন বাসস্টেশনে শনিবার দুপুরের একটি রেস্টুরেন্টের সম্মেলন কক্ষে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

গত ২১ জুন সংবাদ সম্মেলনে সুনামগঞ্জের ডিসি হোসেন বলেন, ‘সুনামগঞ্জের বন্যায় হত্যা মামলার এক ফেরারি আসামি ছাড়া কোনো মৃত্যুর সংবাদ পাইনি। মানুষের সহায়তার পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সহায়তায় বন্যার্ত মানুষদের রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছি।

‘আমাদের যুবলীগ, ছাত্রলীগের পক্ষ থেকেও দুর্গম এলাকায় পৌঁছে মানুষের মধ্যে ত্রাণসহায়তা পৌঁছে দিচ্ছি।’

ওই সময় ডিসি দাবি করেন, বন্যায় বিএনপি তথা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলকে এগিয়ে আসতে তিনি দেখেননি, সে ক্ষেত্রে তাদের আহ্বান জানাননি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম নূরুল। বলেন, ‘সুনামগঞ্জে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা চলাকালীন ভীতিকর পরিস্থিতিতে সরকারি কোনো সহযোগিতা ছাড়াই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটেছে বানভাসি মানুষ। বন্যায় সরকারি-বেসরকারি ভবন, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল তো বটেই, ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিটি বহুতল ভবন পরিণত হয় এক একটি আশ্রয়কেন্দ্রে।

‘সেখানে খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছেন দুর্গতরা। এমন পরিস্থিতিতে দুর্গত এলাকায় খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ব্যাপক চাহিদা দেখা দেয়ার পরও সরকার ও প্রশাসন বলতে গেলে নির্বিকার ছিল। এই মহাদুর্যোগে একাই লড়াই করছেন বানভাসিরা। দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাদ্যসহ নিত্যপণ্যের চরম সংকট। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো হলেও ছিল না প্রশাসনিক নজরদারি।’

নূরুল বলেন, ‘ত্রাণবোঝাই নৌযান দেখলেই দলে দলে ছুটে যাচ্ছেন শত শত অভুক্ত বন্যাদুর্গত। ক্ষুধার তাড়নায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দিতেও দ্বিধা করছেন না তারা। একবেলা খাবারের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। ত্রাণের অপ্রতুলতায় হয় খালি হাতে না হয় খালি পেটে ফিরতে হচ্ছে তাদের।

‘দেশের এমন মহাদুর্যোগে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সরকার শত শত কোটি টাকা ব্যয় করলেও সুনামগঞ্জের দুর্গত, দুর্দশাগ্রস্ত ও অসহায় মানুষের জন্য মাত্র ৬৭৫ মেট্রিক টন চাল আর নগদ ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। এই মুখ রক্ষার বরাদ্দ বানভাসি মানুষের কোনো উপকারে আসবে না। সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি এই মুহূর্তে সুনামগঞ্জ জেলাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা ছাড়া দ্বিতীয় বিকল্প দেখছে না।’

বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘এই মহাদুর্যোগেও জনগণের করের টাকায় পরিচালিত সরকারি প্রশাসন সংকীর্ণ দলীয় দৃষ্টিভঙ্গির ঊর্ধ্বে উঠে কাজ চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত জেলা প্রশাসনের প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের দেয়া বক্তব্য শুনে আমরা দ্বিধান্বিত হয়ে পড়েছি। তিনি একজন সরকারি কর্মচারী নাকি সরকারি দলের জেলা কমিটির কোনো নেতা।

‘এই দুর্যোগময় মুহূর্তে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে দুর্গত মানুষের পাশে ব্যাপক ভিত্তিতে দাঁড়ানো সুযোগ তৈরি করার পরিবর্তে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বারবার আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের গুণকীর্তন করেছেন। বলেছেন, বিএনপিসহ অন্য কোনো রাজনৈতিক দল মাঠে না থাকায় তাদের দুর্যোগ মোকাবিলায় আহ্বান জানাননি তিনি।’

জেলা প্রশাসকের বক্তব্য অসত্য দাবি করে সেটি প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ভয়াবহ বন্যা শুরুর পর থেকে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা আন্তরিকতার সঙ্গে দুর্গতদের উদ্ধার, ত্রাণ, রান্না করা খাবার ও জরুরি নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করে চলছেন। প্রতিটি উপজেলায় আমাদের নেতাকর্মীরা ব্যক্তিগত ও দলীয় উদ্যোগে বন্যাদুর্গতদের সেবায় নিয়োজিত।

‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত দুর্গতদের পাশে থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তার নির্দেশে বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মী দুর্গতদের পাশে রয়েছে। বন্যাদুর্গতদের জন্য সরকারের থেকে বিএনপি বেশি করেছে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, সহসভাপতি মল্লিক মঈন উদ্দিন সোহেল, নাদির আহমদ, শেরেনূর আলী, সেলিম আহমদ, আবুল কালাম।

এ বিভাগের আরো খবর