বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আবুল হোসেনকে পাশে রেখেই সেতু উদ্বোধন

  •    
  • ২৫ জুন, ২০২২ ১৩:০২

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সে সময় আমার উপদেষ্টা মসিউর রহমান, সৈয়দ আবুল হোসেন, সচিব মোশাররফ হোসেন ভূইয়াসহ যারা ছিলেন তাদের মিথ্যা অপবাদ দেয়া হয়। তাদের পরিবার যে যন্ত্রণা ভোগ করেছে আমি সহমর্মিতা জানাই।’

সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে পাশে রেখেই পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে বিশ্বব্যাংকের সরে যাওয়ার আগে দুর্নীতি চেষ্টার অভিযোগের প্রধান লক্ষ্যবস্তু ছিলেন আবুল হোসেন। তাকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে গ্রেপ্তারের দাবিতে অটল ছিল দাতা সংস্থাটি। শুরু থেকেই অভিযোগ অস্বীকার করলেও এই প্রকল্পে বিশ্বব্যাংককে রাখতে একপর্যায়ে মন্ত্রিত্বও ছাড়েন তিনি। তবু বিশ্বব্যাংক সরে যায় প্রকল্প থেকে।

এরপর প্রধানমন্ত্রী আবুল হোসেনকে ‘সত্যিকারের দেশপ্রেমিক’ আখ্যা দেন।

শনিবার দুপুরের আগে মাওয়ার জাজিরা প্রান্তে প্রধানমন্ত্রী যখন সেতুর ফলক উন্মোচন করেন, তখন পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন আবুল হোসেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী সেখানে রাখা সুধী সমাবেশে তাকে সান্ত্বনা দেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে উঠেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ আজ গর্বিত, আমিও আনন্দিত ও গর্বিত। অনেক বাধা, ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে আজ আমরা এই সেতু নির্মাণ করতে পেড়েছি।’

এই সেতু করার শুরু থেকে নানা ঘটনাপ্রবাহের বিষয়ে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবাই জানেন, এই সেতু যখন নির্মাণ করতে যাই, অনেক ষড়যন্ত্র হয়। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে একেকটি পরিবার ও মানুষকে মানসিক যন্ত্রণা দেয়া হয়। শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ, সায়মা ওয়াজেদ, রাদওয়ান সিদ্দিকীসহ প্রতিটি পরিবারকে মিথ্যা অপবাদ দেয়া হয়।

‘সে সময় আমার উপদেষ্টা মসিউর রহমান, সৈয়দ আবুল হোসেন, সচিব মোশাররফ হোসেন ভূইয়াসহ যারা ছিলেন তাদের মিথ্যা অপবাদ দেয়া হয়। তাদের পরিবার যে যন্ত্রণা ভোগ করেছে আমি সহমর্মিতা জানাই।’

দুর্নীতিচেষ্টার অভিযোগ নিয়ে যা হয়েছিল

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পদ্মা সেতু নির্মাণে যখন উদ্যোগ নেয়, তখন ঋণচুক্তি করা হয় দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা, আইডিবির সঙ্গে।

২০১১ সালের এপ্রিলে ২৯০ কোটি ডলারের এই প্রকল্প করতে ঋণচুক্তি করে সরকার। এর মধ্যে ১২০ কোটি ডলার দেয়ার কথা ছিল বিশ্বব্যাংকের।তবে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসএনসি লাভালিনকে কাজ দেয়ার ক্ষেত্রে দুর্নীতিচেষ্টার অভিযোগ হয়েছে- এমন একটি অভিযোগ তোলে দাতা সংস্থাটি। বলা হয়, এই দুর্নীতিচেষ্টায় লাভালিন ছাড়াও সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা জড়িত।

সে সময় বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে এসে তদন্ত করেন। তারা আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা ও তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। কিন্তু দুর্নীতি দমন কমিশন তার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ না পাওয়ার কথা জানিয়ে এই ব্যবস্থায় রাজি হয়নি।

যদিও সে সময়ের সেতুসচিব মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে ২০১২ সালের ২৩ জুলাই আবুল হোসেন মন্ত্রিত্ব ছাড়েন। সরে যান প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান। তবে তার পদত্যাগেও বিশ্বব্যাংক এই প্রকল্পে ফেরেনি।

ওই বছরের জুনেই প্রকল্প থেকে সরে যায় দাতা সংস্থাটি। পরে জাইকা, এডিবি, আইডিবি সরে দাঁড়ালে প্রকল্প নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই বছরের ৪ জুলাই জাতীয় সংসদে নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন।

এই ঘটনায় কানাডার আদালতে এসএনসি লাভালিনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। সেতুর কাজ শুরুর দুই বছর পর ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে কানাডার আদালত রায় দেয় পদ্মা সেতুতে দুর্নীতিচেষ্টার অভিযোগ বায়বীয়, গালগপ্প।

সে সময় কানাডার পত্রিকা টরন্টো স্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়, রায়ের আদেশে বিচারক লেখেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যে তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছিল, তা জল্পনা, গুজব আর জনশ্রুতি ছাড়া কিছুই না। কানাডার সুপিরিয়র কোর্টের বিচারক ইয়ান নর্দেইমার এ রায় দেন।

প্রধানমন্ত্রী নানা সময় বলে এসেছেন, গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মুহম্মদ ইউনূসকে তার পদ ছাড়তে হওয়ায় তিনি ও তার বলয়ে থাকা ব্যক্তিরা বিশ্বব্যাংককে দিয়ে এই কাজ করিয়েছেন। ড. ইউনূসের সঙ্গে সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে এবং হিলারি নিজেও চাপ দিয়েছেন বিষয়টি নিয়ে।

এ বিভাগের আরো খবর