কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে দলটির দুই গ্রপের সংঘর্ষের ঘটনায় ৫৬ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে।
পাকুন্দিয়া উপজেলার ষাইটকাহন গ্রামের সাইফুল ইসলাম জাফরুল শুক্রবার বিকেলে ৩১ জনের নামসহ অজ্ঞাতপরিচয় ২৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
মামলার প্রধান আসামি পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ উদ্দিনের দাবি, এ ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। স্থানীয় সংসদ সদস্যকে খুশি করতে মামলার আসামি করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিন ও বর্তমান সংসদ সদস্য সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিবাদ চলছে। যেকোনো অনুষ্ঠানেই তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনও আধিপত্য বিস্তারের জেরে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।
মামলার বরাতে পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সারোয়ার জাহান নিউজবাংলাকে জানান, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলেরঘাট বাজারে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এরপর ফরিদ উদ্দিনের নির্দেশে সাইফুল ইসলাম জাফরুলের বাড়িতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।
সাইফুলের বাড়িতে একটি এনজিওর অফিস আছে। ওই এনজিওর দুই কর্মীকেও মারধর করা হয়। পাশের বাড়িতেও হামলা চালিয়ে টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে হামলাকারীরা।
এরপর বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, এনজিওকর্মীদের মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন সাইফুল।
ওসি বলেন, ‘মামলার পরপরই কালু, শামীম ও জীবন নামের তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
সাবেক সংসদ সদস্য সোহরাবের অনুসারী ফরিদ বলেন, ‘এই মামলা এমপি নূর মোহাম্মদের ইশারায় হয়েছে। মামলার বাদী এজাহারে লিখেছেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে আমার হুকুমে তার বাড়িতে হামলা করা হয়। অথচ আমি বাদীকেও চিনি না, তার বাড়িও চিনি না।
‘এখানে এমপি নূর মোহাম্মদ তার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করতে গিয়ে নিজেরা হামলার শিকার হলাম আবার মামলাও খেলাম। আমাদের অনেকে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এরই মধ্যে অসহায় দিনমজুর লোকদের আসামি করা হয়েছে।’
ফরিদের দাবি, ‘যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের কেউ এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। এমপিকে খুশি করতে গিয়ে পুলিশ তাড়াহুড়া করে যাকে সামনে পেয়েছে তাকেই গ্রেপ্তার করেছে।’