বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মাহেন্দ্রক্ষণের প্রতীক্ষা

  •    
  • ২৫ জুন, ২০২২ ০০:৩৫

আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। এরপর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতুর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্মোচন করবেন পদ্মার দুই তীরের বিস্ময় জাগানিয়া সংযোগ।

আলোয় উদ্ভাসিত গোটা পদ্মা সেতু। সারি সারি বৈদ্যুতিক বাতির আলো খরস্রোতার পদ্মার বুকে মিশে তৈরি করেছে মোহনীয় পরিবেশ। দূর থেকে মনে হয়, দীর্ঘ আলোকরেখা মেলবন্ধন ঘটিয়েছে পদ্মার দুটি তীরের।

প্রমত্তা পদ্মার বুকে সেতুর এই যৌবনচ্ছটা দেখতে রাতভর জেগে মাওয়া ও জাজিরা প্রান্ত। অসংখ্য মানুষ মোবাইল ফোনে ধারণ করছেন উদ্বোধনের ঠিক আগের রাতের ঐতিহাসিক দৃশ্য।

আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। এরপর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতুর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্মোচন করবেন পদ্মার দুই তীরের বিস্ময় জাগানিয়া সংযোগ।

সেতুর উত্তর থানার বিপরীত দিকেই অনুষ্ঠিত হবে সুধী সমাবেশ। সেখানে সাড়ে তিন হাজার আমন্ত্রিত অতিথির সামনে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাঁকজমকপূর্ণ সেই উদ্বোধন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চূড়ান্ত। এখন শুধু মাহেন্দ্রক্ষণের প্রতীক্ষা।

সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে পদ্মার দুই প্রান্তই সেজেছে বর্ণিল রূপে। চার দিক রঙিন করে তুলেছে ব্যানার-ফেস্টুন আর উৎসবের বর্ণিল আলো।

বর্ণিল আলো আর নানা রঙের পতাকায় সাজানো হয়েছে পদ্মা সেতু। সকালেই উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস/নিউজবাংলা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতু এলাকায় আসবেন আকাশ পথে হেলিকপ্টারে। আর অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিরা আসবেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়ক ধরে, যা এক্সপ্রেসওয়ে নামে পরিচিত। সেই সড়কটিতেও করা হয়েছে বর্ণিল আলোকসজ্জা।

সেতু এলাকায় রয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা। মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়ক থেকে মূল সেতু পর্যন্ত নির্দিষ্ট দূরত্বের ব্যবধানে কড়া প্রহরা। পুরো এলাকাটিকে ঘিরে ফেলা হয়েছে নিরাপত্তার চাদরে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া চার বন্ধু এসেছেন, সেতু উদ্বোধনের আগের আয়োজন দেখতে। তবে সুধী সমাবেশস্থলের নিরাপত্তাকর্মীদের বাধায় তারা আশপাশে থাকতে পারেননি। চলে এসেছেন শিমুলিয়া ফেরিঘাটে।

তাদের একজন অনিক হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আগেও এসেছি। কিন্তু ভোরে তো পদ্মা সেতু খুলে যাচ্ছে। এ এক অন্যরকম আনন্দ।’

পরিবারের অনুমতি মিললে নিজেই গাড়ি চালিয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দেয়ার ইচ্ছে অনিকের। বললেন, ‘বাসায় বলব। মায়ের অনুমতি পেলে পদ্মা সেতু পাড়ি দেব। ওই প্রান্তের এক্সপ্রেসওয়েটাও এখনও দেখা হয়নি।’

জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজাসহ আশপাশের এলাকায়ও সাজানো হয়েছে বর্ণিল আলোতে। ছবি: নিউজবাংলা

এই ক্ষণে সবচেয়ে বেশি উৎফুল্ল স্থানীয়রা। দিনের পর দিন তারা দেখেছেন পদ্মার বুকে অহংকারের স্থাপনা গড়ে ওঠার দৃশ্য, তবে উদ্বোধনের মুহূর্তটি যোগ করেছে একেবারেই ভিন্ন মাত্রা।

স্থানীয় বাসিন্দা খোরশেদ আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই আনন্দ বুঝবেন না। এইটা ক্যামনে বুঝাই আপনাদের। কত দিনের স্বপ্নপূরণ হইতাছে আপনেরা বুঝবেন না।’

পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী আয়োজনের প্রস্তুতির ব্যস্ততার ফাঁকে শুক্রবার দুপুরে হয়ে গেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী গাড়ির মহড়া। বেলা ২টার দিকে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্ত থেকে গাড়িবহরটিকে মাওয়া প্রান্তের দিকে আসতে দেখা যায়। শনিবার সেতু উদ্বোধনের পর এ বহরে করেই টোল প্লাজায় টোল দিয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে সড়কে, জলে, অন্তরীক্ষে থাকবে নানা আয়োজন।

পদ্মা নদী পারাপারের যাত্রীবাহী বেশ কিছু লঞ্চ নিয়ে পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে শুক্রবার দুপুরে একটি নৌ মহড়া দেখেছেন স্থানীয়রা। এই মহড়ায় অংশ নেয়া লঞ্চগুলোতে উড়ছিল লাল সবুজের পতাকা। শনিবার যখন প্রধানমন্ত্রী সেতু পাড়ি দেবেন, তখন পদ্মার জলে দেখা যাবে এই মহড়া।

রাতের আলোয় আলোকিত পদ্মা সেতু। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস/নিউজবাংলা

আকাশেও ছিল জাতীয় পতাকাশোভিত সারি সারি হেলিকপ্টার। উড়তে দেখা যায় যুদ্ধবিমান। সবই শনিবারের জমকালো উদ্বোধনী আয়োজনের প্রস্তুতি বলে জানা গেছে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, শনিবার ৩১টি বিমান ও হেলিকপ্টারের সমন্বয়ে ফ্লাইং ডিসপ্লের আয়োজন করেছে বিমানবাহিনী। যেখানে অংশ নেবে যুদ্ধ বিমান মিগ-২৯।

শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের উদ্দেশে হেলিকপ্টারে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সুধী সমাবেশ শেষে পদ্মা সেতু পাড়ি দেবেন তিনি।

শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তও এখন আলোকচ্ছটায় বর্ণিল। এই প্রান্তে আট কিলোমিটার এলাকাজুড়ে করা হয়েছে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর জনসভার প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে পুরো এলাকা। জনসভাস্থল বাংলাবাজার ঘাট সংলগ্ন এলাকার মোড়ে মোড়ে তৎপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

এ বিভাগের আরো খবর