শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবার বাসিন্দা খাদিজা আক্তার। এখনও বয়ে বেড়াচ্ছেন ২০১৪ সালে পিনাক-৬ লঞ্চডুবির ভয়াবহ স্মৃতি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর জাজিরা প্রান্তের বাংলাবাজার এলাকায় জনসভায় বক্তব্য দেবেন। সেই জনসভার মঞ্চ দেখতে শুক্রবার বিকেলে এসেছিলেন খাদিজা। এ সময় তার সঙ্গে কথা হয় নিউজবাংলার।
খাদিজা বলেন, ‘যে দিন লঞ্চ ডোবে, সেই দিন আমি ওই লঞ্চে উঠতে যাচ্ছিলাম। কিন্তু পেছন থেকে আমার ভাই ডাক দেয়ায় আমি লঞ্চে উঠতে পারিনি। পরের লঞ্চে উঠি। ওই লঞ্চটি (পিনাক-৬) ডুবে যাওয়ার সময় আমাদের লঞ্চটি পেছনেই ছিল। সেই দিন চোখের সামনে লঞ্চটি ডুবে যায়। হারিয়ে যায় কত মানুষ। ওই দৃশ্য মনে পড়লে এখনও ভয় লাগে।’
তিনি বলেন, ‘এখন পদ্মা সেতু হয়ে গেল। দেখেই মনডা আনন্দে ভরে যায়। আমরা এখন সেতুর উপর দিয়ে যেতে পারব। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।’
শরীয়তপুর থেকে এক দিন আগেই সমাবেশস্থলে হাজির হয়েছেন মো. আলী। তিনি বলেন, ‘এই পদ্মা সেতু করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন। এই সেতুর ফলে আমাদের ভাগ্যের উন্নয়ন হবে।’
ঝিনাইদহ থেকে এসেছেন মুক্তিযোদ্ধা নূর বক্স। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখানে আসবেন, তাই আমি এসেছি। এই সেতু পেয়ে আমাদের আনন্দের সীমা নেই। আমি তিন দিন আগেই এসেছি। প্রধানমন্ত্রী যাওয়ার আগ পর্যন্ত আমি এখানে থাকব।’
তিনি বলেন, ‘এই সেতুর ফলে দেশ স্বাধীনের পর দ্বিতীয় বড় আনন্দ হচ্ছে আমাদের।’
পিনাক-৬ লঞ্চডুবির প্রত্যক্ষদর্শী খাদিজা আক্তার। ছবি: নিউজবাংলা
স্থানীয় বাসিন্দা নাসিমা বেগম বলেন, ‘আমরা কখনও ভাবিনি সেতু দেখে যেতে পারব। স্বপ্নের সেতু এখন সত্য (বাস্তব) হয়েছে। পদ্মা সেতুর ফলে আমরা নতুন জীবন পাইলাম।’
২০১৪ সালের ৪ আগস্ট বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটের মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পিনাক-৬ লঞ্চটি ডুবে যায়। সেই দুর্ঘটনায় সরকারি হিসাবে ৪৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া নিখোঁজ হন ৬৪ জন, যাদের আর সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এ ছাড়া পদ্মায় বিভিন্ন সময় ট্রলার, স্পিডবোট ডুবে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।