খুলনার নর্দান ইউনিভার্সিটি অফ বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির ছাত্র প্রমিজ নাগের মৃত্যুর ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সুরাইয়া ইসলাম মিমকে।
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বাবুপুর গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে শুক্রবার দুপুরে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৬ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বজলুর রশীদ।
এর আগে সোনাডাঙ্গা থানায় বৃহস্পতিবার রাতে সুরাইয়ার নামে মামলাটি করেন প্রমিজের চাচাতো ভাই প্রীতিশ কুমার নাগ।
খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গার গোবরচাকা এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে বুধবার সন্ধ্যায় প্রমিজের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রমিজ নাগ খুলনার নর্দান ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার বাড়ি পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার সাচিয়া গ্রামে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, একই বিশ্ববিদ্যলায়ের লেখাপড়ার সুবাদে প্রমিজ ও সুরাইয়ার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সুরাইয়া প্রায়ই প্রমিজের বাসায় আসা-যাওয়া করতেন। এক পর্যায়ে বিয়ে করার জন্য প্রমিজের ওপর চাপ দেয়া শুরু করেন সুরাইয়া। দুজন ভিন্ন ধর্মের হওয়ায় প্রমিজ তাতে রাজি হননি। এ নিয়ে মনোমালিন্যের জেরে সুরাইয়া প্রমিজকে নির্যাতন করতেন।
বাদীর অভিযোগ, সুরাইয়ার নির্যাতন ও প্ররোচণায় প্রমিজ আত্মহত্যা করেছেন।
কেএমপি সোনাডাঙ্গার সহকারী পুলিশ কমিশনার আতিক বলেন, ‘প্রমিজের মাথায় আঘাতের চিহ্ন ও শরীরে রক্তের দাগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তার ঘরে বেশ কিছু স্থানে রক্তের দাগ রয়েছে ও সিসিটিভির ফুটেজে মরদেহ উদ্ধারের আগে ওই ঘর থেকে তার ওই বান্ধবীকে দ্রুত স্থান ত্যাগ করতে দেখা গেছে।’
পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে প্রমিজের বাবা-মাকে উদ্দেশ করে লেখা হয়েছে, কেউ একজন তার কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করছিলেন। তাকে ৫০ হাজার টাকা দেয়ার কথা লেখা আছে। তাই পুরো বিষয়টি বিশ্লেষণ করে আমরা এটি শুধুমাত্র আত্মহত্যা হিসেবে নিতে পারছি না।’
প্রমিজের বন্ধু আজগর রাজ বলেন, ‘সুরাইয়ার সঙ্গে প্রমিজের সম্পর্কের বিষয়টি আমাদের বিভাগের সবাই জানত। কিছুদিন আগে ক্যাম্পাসে কথা-কাটাকাটির পর তিনি প্রমিজকে মারধরও করেছিলেন।’
একই কথা জানিয়েছেন প্রমিজের চাচাতো ভাই দীপংকর নাগও। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে ওই তরুণী প্রমিজকে উপহারও পাঠিয়েছেন। সেগুলোর মূল্য ফেরত চাচ্ছিলেন প্রমিজের কাছ থেকে। প্রমিজ বাড়িতে এসব কথা শেয়ার করে টাকাও চেয়েছিলেন।’