বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রশিক্ষণ নেয়া হলো না ৪ শিক্ষকের, আর্থিক সহায়তার ঘোষণা

  •    
  • ২৪ জুন, ২০২২ ১৬:৩৩

ওসি নজরুল ইসলাম জুয়েল বলেন, ‘মরদেহগুলো থানায় নেয়া হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের হস্তান্তর করা হবে। ট্রাকের চালক ও হেলপার পালিয়ে যাওয়ায় তাদের আটক করা সম্ভব হয়নি।’

মান উন্নয়নের প্রশিক্ষণ নিতে অটোরিকশায় করে যাচ্ছিলেন শিক্ষকরা। কিন্তু পথেই শেষ হলো তাদের যাত্রা। ট্রাকচাপায় চারজন প্রাণ হারানোর পাশাপাশি আহত হয়েছেন এক শিক্ষক। দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে অটোরিকশা চালকেরও।

নওগাঁর সদরে শুক্রবার সকালের এ ঘটনায় নিহত পাঁচজনের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে।

সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) মির্জা ইমাম উদ্দিন বলেন, ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় নিহতদের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও প্রত্যেক পরিবারকে সহায়তা করা হবে।’

নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কের বাবলাতলী মোড় এলাকায় শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ওই দুর্ঘটনা ঘটে।আহত এক স্কুলশিক্ষককে গুরুতর অবস্থায় নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহতরা হলেন নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার নেহেন্দা গ্রামের ও পানিহারা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন, বিজলী গ্রামের বেলকাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মুকবুল হোসেন, ভাদুরন্দ গ্রামের গোলাম নবীর স্ত্রী গুটিসর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জান্নাতুন খাতুন, গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দুলালপুর গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে ও আমকুড়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক লেলিন সরদার ও সদরডাঙ্গা গ্রামের সিরাজ উদ্দিনের ছেলে অটোরিকশার চালক সেলিম হোসেন।

এ ছাড়া আহত হয়েছেন নিয়ামতপুর উপজেলার কুড়িদহ গ্রামের আব্দুল গফুরের মেয়ে ও কুড়িদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নূরজাহান বেগম।

স্থানীয়দের বরাতে নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল নিউজবাংলাকে জানান, সকালে নিয়ামতপুর উপজেলা থেকে যাত্রী নিয়ে একটি অটোরিকশা নওগাঁর দিকে যাচ্ছিল। নওগাঁ শহর থেকে মাছের ফিডবোঝাই একটি ট্রাক যাচ্ছিল রাজশাহীর দিকে।

পথে বাবলাতলী মোড়ে মাটিবোঝাই একটি ট্রাক্টরকে সাইড দিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারায় ট্রাকটি। অটোরিকশাটিকে চাপা দিয়ে এটি সড়কের পাশে পুকুরে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান চার শিক্ষকসহ অটোর চালক। গুরুতর আহন হন আরেক শিক্ষক।

তারা সবাই নওগাঁ পিটিআই ট্রেনিং সেন্টারে প্রশিক্ষণ নিতে যাচ্ছিলেন বলে জানান ওসি।

থানায় স্বজনদের আহাজারি

দুর্ঘটনার পর সদর থানার সামনে আহাজারি করতে দেখা গেছে স্বজনদের।

নিহত স্কুলশিক্ষক জান্নাতুন খাতুনের স্বামী গোলাম নবী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রশিক্ষণ নিতে নওগাঁ শহরে আসতেছিলেন আমার স্ত্রী। সকালে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় শেষ বারের মতো কথা হয় তার সঙ্গে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দুর্ঘটনার খবর পাই। নিজেকে কীভাবে স্থির রাখব? এমন করে আমার স্ত্রীকে হারাতে হবে, তা কখনোই ভাবিনাই।’

অটোরিকশার চালক সেলিম হোসেনের বাবা সিরাজ উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে অটোরিকশা নিয়ে শিক্ষকদের নওগাঁ পৌঁছে দিতে বের হয়। সকাল ৯টার দিকে জানতে পারি আমার ছেলেটা আর বেঁচে নেই। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিল ছেলেটা। যে ট্রাক চালক আমার ছেলেসহ ৫জনকে চাপা দিয়ে মারল, তার শাস্তি চাই।’

নওগাঁ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ট্রাকের চাপায় অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে গিয়ে পানির নিচে ডুবে ছিল। অটোরিকশটি কেটে ভেতর থেকে একে একে পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ট্রাকটি উদ্ধার করে থানা পুলিশের কাছে হস্থান্তর করা হয়েছে।’

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পিটিআই ট্রেনিং সেন্টারে নিহত শিক্ষকরা প্রশিক্ষণ নিতে আসছিলেন। চারজন শিক্ষক ও অটোরিকশার চালক মারা গেছেন ট্রাকের চাপায়; খুবই দুঃখজনক ঘটনা। পরিবারের কাছে নিহতের মরদেহ হস্তান্তর ও তাদের কীভাবে সহায়তা করা যায়, বিষয়গুলো আমরা তদারকি করছি।’

ওসি নজরুল ইসলাম জুয়েল বলেন, ‘মরদেহগুলো থানায় নেয়া হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের হস্তান্তর করা হবে। ট্রাকের চালক ও হেলপার পালিয়ে যাওয়ায় তাদের আটক করা সম্ভব হয়নি।’

এ ঘটনায় বিকেল পর্যন্ত নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ মামলা করেনি বলেও জানান তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর