পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ঘিরে সারা দেশের মতো সাতক্ষীরা জেলায়ও বইছে উৎসবের আমেজ। পাড়া-মহল্লায় গণসংযোগ, উঠান বৈঠক, সভা-সেমিনারসহ মিষ্টি বিতরণ করছেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।
সেতু উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ সারা দেশের মানুষের শক্তিশালী যোগাযোগ স্থাপনসহ কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ থেকে সমাজের সুধীজনেরা।
সাতক্ষীরা থেকে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে সাড়ে ৩০০ বাসে করে প্রায় ১৫ হাজার নেতা-কর্মী পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এর বাইরে অনেকেই যাবেন ব্যক্তি উদ্যোগ।
এদিকে চায়ের দোকান থেকে শুরু করে হাট-বাজার সর্বত্র এখন পদ্মা সেতু নিয়ে চলছে সরব আলোচনা। বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে পদ্মা সেতু তথা সরকারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
পদ্মা সেতু নিয়ে দেশে ও দেশের বাইরে চলছে বিস্তর আলোচনা, চলছে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারসহ নানান হিসাব-নিকেশ। সেতু উদ্বোধন ঘিরে এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচিও দেয়া হয়েছে। আয়োজন করা হয়েছে সেতুর জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচি হিসেবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশের সকল জেলা-উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অংশ নেবেন বলে জানা গেছে।
এর মধ্যে সাতক্ষীরা জেলা থেকে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রায় ১৫ হাজার নেতা-কর্মী পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। এর বাইরেও সাতক্ষীরা জেলা থেকে ব্যক্তি উদ্যোগে অনেকেই এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম আশিকুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্দেশনা অনুযায়ী সাতক্ষীরা থেকে ছাত্রলীগের দেড় হাজার নেতা-কর্মী পদ্মা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।’
সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তির নেতৃত্বে জেলা থেকে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কেউ যাচ্ছেন না। আমাদের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ৩০০ বাসে দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে ২৫ জুন ভোরবেলা রওনা দেব।'
তিনি আরও বলেন, ‘সাতক্ষীরার প্রত্যেক উপজেলা থেকে নির্ধারিত ২৫ থেকে ৩৫টি করে বাস ছাড়া হবে। এ ছাড়া সদর উপজেলা থেকে ৬০টি বাসে করে নেতা-কর্মীদের নিয়ে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগদান করব।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ঘিরে কেন্দ্রীয় নির্দেশনার মধ্যে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া ছাড়াও জেলার সব অঞ্চলে পাড়া-মহল্লায় উৎসব করার কথাও বলা হয়েছে।
‘যেহেতু সব নেতা-কর্মী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন; সেখান থেকে না ফেরা পর্যন্ত পাড়া-মহল্লার উৎসব সম্পন্নের বিষয়ে এখন বলা যাচ্ছে না। তবে আশা করছি, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকে ফিরে আমরা দলীয় নেতাদের সহযোগিতায় পাড়া-মহল্লায় উৎসব করতে পারব।’
এদিকে সেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পিরোজপুর জেলা থেকে লঞ্চ ভাড়া করে যাচ্ছেন অন্তত ২০ হাজার মানুষ। পদ্মা সেতু দেখতে সড়কপথে কিছু লোক গেলেও বাকিদের যাতায়াতের প্রধান বাহন হবে লঞ্চ। তাই প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৯টি লঞ্চ।
জেলার ৭টি উপজেলার মানুষ পদ্মা সেতু দেখতে আগের দিন বিকেলেই লঞ্চে ও সমাবেশের দিন সকালে বাসে করে রওনা দেবেন পিরোজপুরের নেতা-কর্মীরা।
জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদ প্রশাসক মহিউদ্দীন মহারাজ নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘২৪ জুন সন্ধ্যা ৬টার দিকে লঞ্চগুলো ছেড়ে যাবে ভান্ডারিয়া, কাউখালী ও চরখালী লঞ্চঘাট থেকে। আমরা আশা করছি, জেলা থেকে ২০ হাজারেরও বেশি আওয়ামী লীগ ও অংঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। আমরা শুধু লঞ্চ নয়, বাসেরও ব্যবস্থা রেখেছি। যারা আগের দিন যেতে পারবেন না তাদের জন্য সড়কপথের এই সুবিধা।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ২৫ জুন সারা দেশের মতো পিরোজপুর জেলাজুড়েও হবে উৎসব। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সকালে র্যালি, সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ রয়েছে বিভিন্ন আয়োজন।’