লাক্কাতুরা গ্যাসকূপে ফায়ার ফ্লোর (অতিরিক্ত গ্যাস পোড়ানো) ঘটনায় সিলেট নগরজুড়ে আগুন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বহুজাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানি শেভরন গ্যাসকূপে ফ্লোর শুরু করলে নগরীর উত্তর-পশ্চিমের আকাশ আগুন বর্ণ ধারণ করে।
বন্যার মধ্যে আগুনের শিখা দেখে সন্ধ্যার পর উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন নগরবাসী। একে অন্যকে ফোন করে আগুনের শিখা সম্পর্কে জানতে চান। ফায়ার সার্ভিসের অফিসেও যায় একের পর এক ফোন।
ফায়ার সার্ভিস সিলেট কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সন্ধ্যা থেকে শতাধিক মানুষ এই আগুনের উৎস জানতে কল দিয়েছেন। জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা কল দিয়ে এ বিষয়ে জানতে চান।
তিনি বলেন, ‘সবার মধ্যেই আগুন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, কোথাও আগুন লাগেনি। লাক্কাতুরা গ্যাসক্ষেত্রে ফায়ার ফ্লো করছে শেভরন।’
এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এ রকম কিছু করার আগে আমাদের অবগত করার নিয়ম রয়েছে। তারা আগে জানালে আমরা জনগণকে অবহিত করতে পারতাম। শেভরন কর্তৃপক্ষ আগে এ ব্যাপারে অবহিত করেনি।’
ফায়ার সার্ভিসের সিলেটের জ্যেষ্ঠ স্টেশন অফিসার বেলাল আহমদ বলেন, ‘শেভরন একটা বাজে কাজ করেছে। তাদের এ ধরনের কাজ করার আগে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, জেলা প্রশাসন, মিডিয়াসহ সংশ্লিষ্টদের জানানো উচিত ছিল।’
তিনি বলেন, ‘এমনিতেই বন্যা নিয়ে মানুষ আতঙ্কে আছে। এর মধ্যে এমন ঘটনায় নগরজুড়ে আগুন দেখা দেয়।’
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বেলাল আহমদ বলেন, ‘আগুন প্রায় ২০ ফুটের ওপরে উঠেছে। ফলে সবার মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। শেভরনের এই কাজ করা ঠিক হয়নি।’
লাক্কাতুরা গ্যাসক্ষেত্র পরিচালনায় রয়েছে শেভরন। প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ কর্মকর্তা শেখ জাহিদুর রহমান বলেন, ‘শেভরন লাক্কাতুরা গ্যাসক্ষেত্রের সংস্কার কাজ করবে। এ জন্য পাইপে থাকা অতিরিক্ত গ্যাস জ্বালানো হচ্ছে। তাই আগুনের শিখা দেখা যাচ্ছে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’
তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে জানিয়েই এ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।’
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি সিলেটের সমন্বয়ক শাহ শাহেদা আক্তার বলেন, ‘আমার বাসা থেকে আগুনের শিখা দেখা যাচ্ছে। এতে আমার পরিবারের সদস্যরাও আতঙ্কে আছেন। শেভরন কোনো সংস্কার কাজ করলে আগে থেকে তা নগরবাসীকে জানানো উচিত ছিল।’