আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় সংঘর্ষ হয়েছে। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।
উপজেলার পুলেরঘাট বাজারে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশে। স্থানীয় দুটি গ্রুপের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো এলাকা। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। আহত বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সারওয়ার জাহান সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে।’
আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনের অনুষ্ঠানে নেতৃত্বের বিরোধে এ সংঘর্ষ বলে জানান স্থানীয়রা।
হামলায় আহত সাংবাদিক খায়রুল আলম ফয়সালকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ছবি: নিউজবাংলা
এলাকার লোকজন জানান, পাকুন্দিয়ায় আওয়ামী লীগ বর্তমানে দুই ভাগে বিভক্ত। কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনের সংসদ সদস্য সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ ও সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সোহরাব উদ্দিনের অনুসারীরা বিভিন্ন কর্মসূচিতে বিবাদে জড়াচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলে আসছে তাদের মধ্যে।
এর আগে একাধিক কর্মসূচি পালনে তাদের সংঘর্ষ হয়েছে। পুরনো বিরোধের জেরেই বৃহস্পতিবার তারা ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষের সময় আহত হয়েছেন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের জেলা প্রতিনিধি খায়রুল আলম ফয়সাল।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পুলেরঘাট বাজারে সংবাদ করছিলাম। বিকেল ৫ টার দিকে কয়েকজন পেছন থেকে হামলা করে। এতে মাথা ফেটে যায়। সেখানেই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।’
হামলার সময় দৈনিক প্রথম আলোর জেলা প্রতিনিধি তাফসিলুল আজিজের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন কয়েকজন।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হামলাকারীরা আমাকে খোঁজাখুঁজি করেছে। না পেয়ে মোটরসাইকেলটি ভাঙচুর করে।'
সংঘর্ষের ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক মো. ফরিদ উদ্দিন দায়ী করেছেন এমপি সমর্থকদের। তিনি সোহরাব উদ্দিন গ্রুপের নেতা হিসেবে পরিচিত।
ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি ছিল পুলেরঘাট বাজারে। আমরা সেখানে গেলে এমপির লোকেরা আমাদের বাধা দেয়। তারা আমাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা করলে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।’
নূর মোহাম্মদ গ্রুপের নেতা হিসেবে পরিচিত উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি নাজমুল হক দেওয়ান বলেন, ‘বিকেলে পুলেরঘাট বাজারের কর্মসূচিতে অংশ নিতে গেলে হামলা হয়। সোহরাবের লোকেরা আমাদের নেতাকর্মীদের মারপিট করেন। এতে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।’
সংঘর্ষের পর এলাকার পরিবেশ থমথমে। তবে কোনও পক্ষ রাত পর্যন্ত মামলা করেনি।
কিশোরগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল-আমিন হোসাইন নিউজবাংলাকে বলেন, 'পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ এক রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে।'