থাইল্যান্ডের ব্যাংককে চিকিৎসাধীন জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদকে দেখতে থাইল্যান্ড গেলেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ের তিনি। তিনি ব্যাংককে ওয়েস্টিন গ্র্যান্ড সুকুমভিত হোটেলে অবস্থান করবেন।
আগামী রোববার রাতে ঢাকার পথে রওয়ানা হবেন জি এম কাদের।
গত বছরের ৫ নভেম্বর রওশন এরশাদকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ব্যাংকক নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি থাইল্যান্ডের ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দেশে থাকতে ফুসফুসের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের প্রেস সচিব খন্দকার দেলোয়ার জালালী গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত সফরে আজ থাইল্যান্ড গিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।
তবে দলীয় চেয়ারম্যানের থাইল্যান্ড যাওয়া নিয়ে জাতীয় পার্টির এক কেন্দ্রীয় নেতা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদকে দেখতেই দলের চেয়ারম্যান থাইল্যান্ডে গিয়েছেন। সেখানে উনি উনার ভাবীর (রওশন এরশাদ) সঙ্গে দেখা করবেন। মূলত এটাই উদ্দেশ্য। থাইল্যান্ডে যাওয়া আর কোনো কারণ নেই।’
এত দিন পরে কেন যাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দলীয় চেয়ারম্যান এত দিন ব্যস্ততার কারণে থাইল্যান্ডে যেতে পারেননি। এখন উনার সুযোগ হয়েছে তাই গেছে।‘
রওশন এরশাদ অভিমান করেছেন এবং এটি জানতে পেরে জি এম কাদের থাইল্যান্ড গিয়েছেন- এমন একটি খবরও ছড়িয়েছে। এর সত্যতা জানতে চাইলে জালালী বলেন, ‘এটা মিথ্যা কথা। মানুষ অনেক কথা বলে। কিন্তু এটা সত্য নয়। উনাদের ভাবী-দেবরের সম্পর্ক অনেক চমৎকার বলেই জানি। প্রায় উনাদের ফোনে কথা হয়।’
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের সফর সঙ্গী হিসেবে রয়েছেন দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু ও তাঁর সহধর্মীনী, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তফা আল মাহমুদ এবং ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান।
বিমান বন্দরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানকে বিদায়ী শুভেচ্ছা জানান দলীয় চেয়ারম্যান এর উপদেষ্টা শেরিফা কাদের, মমতাজ উদ্দিন, জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব আশিক আহমেদ, যুগ্ম কোষাধ্যক্ষ আবু তৈয়ব, যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম, কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল ইসলাম, ইঞ্জিয়ার এলাহান উদ্দিন, জাতীয় ছাত্রসমাজ নেতা আল আমিন সরকার।
দুপুরে থাইল্যান্ডের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার আগে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, দেশের মানুষ ভালো নেই। বন্যায় রংপুর ও সিলেট বিভাগসহ উত্তরাঞ্চলের কোটি মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে উঠেছে। তাদের মাঝে খাদ্য নেই, বিশুদ্ধ পানি নেই, জীবন রক্ষাকারী অসুধ নেই, শিশু খাদ্য নেই। এমন বাস্তবতায়, সাংগঠনিক কর্মকান্ড পরিচালনা না করে গণমানুষের পাশে দাঁড়ানোই উত্তম।জাতীয় পার্টির সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের দূর্গত মানুষকে সার্বিক সহায়তা করতে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি জাতীয় পার্টি ত্রাণ বিতরণ কমিটিকে সার্বিক সহায়তা নির্দেশ দেন জি এম কাদের।
আগামী সোমবার দেশে ফেরার কথা রয়েছেন রওশন এরশাদের। জাপা নেত্রীর একান্ত সহকারী সচিব মামুন হাসান এ তথ্য জানিয়েছিলেন।
জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন শেষে আগামী ৪ জুলাই রুটিন চেকআপের লক্ষ্যে আবার ব্যাংকক যাবেন রওশন।