বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘এখনও কেউ এক মুঠ ত্রাণ দিতে আইছে না’

  •    
  • ২৩ জুন, ২০২২ ০৯:২৭

সবজি ব্যবসায়ী আব্দুল হক বলেন, ‘চুলা জ্বালানির মতো অবস্থা নাই। নিজে এক বেলা খাইয়া থাকরাম, কিন্তু বাচ্চাকাচ্চার কান্দন দেখলে বুকটা ফাটি যায়। এরারে কিছু দিতে পারতেছি না। সেনাবাহিনী শুনছি ত্রাণ দেয়। এদিকে এখনও একটা মানুষও আইছে না। এক দিন চারটা খিচুড়ি পাইছিলাম, এটাই শেষ। চেয়ারম্যান, মেম্বার এরারও কোনো দেখা নাই।’

‘ঘরের চুলা ছয় দিন হয় জ্বালাইতে পারি না। আমার বাসায় এখনও কোমরপানি। চাঙ্গ বানাইয়া থাকরাম। এই পানি আমার ঘরের সবতা নষ্ট করি দিসে।

‘এখন পর্যন্ত একজন মানুষও আইয়া আমরা খোঁজ নিসে না। ভোটের সময় তারা ঘর ছাড়ে না। আজকে তারা ধারে-কাছেই নাই। পানি কিলান ফুটাইয়া খাইতাম? চুলাই তো জ্বালাইতে পাররাম না।’

বলছিলেন সুনামগঞ্জ পৌর শহরের হাসন নগর এলাকার রাজনা বেগম। তিন ছেলে-মেয়ে নিয়ে বন্যার পানিতেই আছেন। ডাকাতির ভয়ে বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাননি।

সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও বানভাসি এই মানুষের অবস্থার উন্নতি হয়নি। খাবার ও সুপেয় পানির অভাবে চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন তারা।

হাসন নগর ও ইকবাল নগর এলাকা প্লাবিত হওয়ায় অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে এসে উঠেছেন। তবে এখানে মিলছে না পর্যাপ্ত খাবার।

আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষের অভিযোগ, গত ছয় দিন কিছু সংগঠন রান্না করা খিচুড়ি দিয়ে গেছে। তা দিয়ে এক বেলা কেটেছে। বাকি দুই বেলা না খেয়েই থাকতে হয়েছে। সুপেয় পানির অভাবে খেতে হচ্ছে বন্যার পানি।

সরকারি কোনো সহায়তা তো মেলেইনি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও কেউ এসে খোঁজ নেয়নি।

হাসন নগর এলাকার সবজি ব্যবসায়ী আব্দুল হক বলেন, ‘আজকে এক সপ্তাহ ধরি আমার ঘরো পানি। বোরো সিজনও মানুষের ধান কাটিয়া কিছু ধান পাইছিলাম। এগুলো থেকে চাল করছিলাম। সব পানিতে নষ্ট অই গেছে।

‘চুলা জ্বালানির মতো অবস্থা নাই। নিজে এক বেলা খাইয়া থাকরাম, কিন্তু বাচ্চাকাচ্চার কান্দন দেখলে বুকটা ফাটি যায়। এরারে কিছু দিতে পারতেছি না। সেনাবাহিনী শুনছি ত্রাণ দেয়। এদিকে এখনও একটা মানুষও আইছে না। এক দিন চারটা খিচুড়ি পাইছিলাম, এটাই শেষ। চেয়ারম্যান, মেম্বার এরারও কোনো দেখা নাই।’

ইকবাল নগর এলাকায় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় বানভাসিদের আশ্রয় নিতে হয়েছে সুনামগঞ্জ পৌর ডিগ্রি কলেজে।

শাহেদা বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নিজের যা সম্বল আছিল সব পানিতে নিছে গা। বাচ্চাকাচ্চা লইয়া বড় একটা মুশকিলের মধ্যে আছি। এখনও কেউ এক মুঠ ত্রাণ দিতে আইছে না।

‘আশ্রয়কেন্দ্র থাকি এখন বারোইয়া (বের হয়ে) আইছি। রাস্তায় যদি কেউ সামান্য কিছু দেয় তাইলে বাচ্চাগুলার মুখে দিমু।’

বন্যার্তরা অভিযোগ করলেও খাবারের সংকট নেই বলে দাবি করেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা সবদিকে নজর রাখছি। খাবারের সংকট নেই। যেখানে যেভাবে প্রয়োজন সেভাবেই ত্রাণ সহায়তা পাঠাচ্ছি। আমাদের সঙ্গে যৌথবাহিনীও কাজ করছে।’

এ বিভাগের আরো খবর