দেশে বন্যা পরিস্থিতির মধ্যে পদ্মা সেতু উদ্বোধনে বড় আয়োজন রাখার সমালোচনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আমন্ত্রণ পেলেও তিনি সেই আয়োজনে যাবেন কি না, এ বিষয়ে অবশ্য কিছু বলেননি।
বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে নিচতলায় এক আলোচনায় পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের আয়োজন নিয়ে কথা বলেন বিএনপি নেতা।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা ও বই প্রদর্শনীর আয়োজন করে জিয়া স্মৃতি পাঠাগার নামে একটি সংগঠন।
আগামী শনিবার জমকালো আয়োজনে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করতে যাচ্ছে সরকার। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর নানা ঘটনাপ্রবাহের কারণে এই সেতুটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে জমকালো করতে চাইছে সরকার।
দেশের সবচেয়ে বড় সেতুটির উদ্বোধনে মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির সাতজন জ্যেষ্ঠ নেতাকে আমন্ত্রণও জানানো হয়েছে।
তবে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও উত্তরের বিভিন্ন জেলায় বন্যার মধ্যে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আয়োজন সমীচীন বলে মনে করেন না ফখরুল। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের বিশাল অংশের মানুষ আজকে বন্যার পানিতে দুঃসহ জীবনযাপন করছে। লোকালয় তলিয়ে গেছে, মানুষ ভেসে যাচ্ছে, তারা চিকিৎসা পাচ্ছে না। তারা ভয়াবহ দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। দুর্ভাগ্য আমাদের সরকার সেখানে কোনো নজর না দিয়ে, বানভাসি মানুষকে উদ্ধারের জন্য, তাদের পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা না করে তারা এখন সেতু উদ্বোধন উৎসব নিয়ে মেতে আছে।’
সরকার জোর করে ক্ষমতায় আছে- এমন অভিযোগও করেন বিএনপি মহাসচিব। বলেন, ‘তারা উন্নয়নের নামে দুর্নীতি করে বিদেশে টাকা পাচার করছে। একদিকে বন্যা, অন্যদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি মানুষকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। অন্যদিকে গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠানে ধ্বংস করে তারা দেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।’
সরকার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে খাটো করার জন্য, তার সব অবদানকে ম্লান করার জন্য সুপরিকল্পিতভাবে নেতিবাচক প্রচার চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন ফখরুল। বলেন, ‘জিয়াউর রহমান শুধু একজন সৈনিক ছিলেন না, তিনি এই দেশের মুক্তিযুদ্ধের যে ঘোষণা, সেই ঘোষণা দিয়েছেন।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা, দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা থেকে মুক্ত করতে জিয়াউর রহমানের আদর্শকে অনুসরণ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের সভাপতি আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জহির দীপ্তির সঞ্চালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, সাবেক ছাত্র নেতা আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী।