ঈদের বিশেষ ট্রেনের মধ্যে এবার খুলনাগামী ট্রেন বাদ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। বলেন, ‘ঈদের আগে পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়ায় আমরা মনে করছি, ওই অঞ্চলের মানুষ সড়কপথে বাড়ি যাওয়ার চিন্তা বেশি করবে। এ কারণে খুলনার স্পেশাল ট্রেনটি আমরা এবার প্রত্যাহার করেছি। ট্রেনটি যাবে পঞ্চগড়।’
বুধবার রাজধানীর রেল ভবনে রেলের টিকিট বিক্রি ও ঈদযাত্রা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
রেলমন্ত্রী বলেন, ‘গতবারের ঈদযাত্রার অভিজ্ঞতা থেকে এবার আমরা খুলনার ট্রেনটি পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁওসহ উত্তরবঙ্গগামী মানুষের জন্য দিয়েছি। কারণ আমরা দেখেছি উত্তরবঙ্গগামী মানুষের মধ্যে ঈদযাত্রায় চাপ বেশি।
‘পঞ্চগড়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেশনগামী ওই স্পেশাল ট্রেনটি কমলাপুরে না এসে গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে যাবে। কারণ ঈদযাত্রার শেষের দিকে গার্মেন্টস শ্রমিকসহ যাত্রীদের অনেক চাপ পড়ে।’
পঞ্চগড়গামী ওই ট্রেনটিতে রংপুর ও লালমনিরহাটগামী যাত্রীদের সিট বরাদ্দ থাকবে বলেও জানান রেলমন্ত্রী।
তিনি জানান, ‘পঞ্চগড়গামী ঈদ স্পেশাল ট্রেনের টিকিট জয়দেবপুর থেকে এবং কিছু টিকিট কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে বিক্রি হবে। তবে ট্রেনটি ছাড়া হবে জয়দেবপুর রেলস্টেশন থেকে।’
আসন্ন ঈদে মোট ছয় জোড়া স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে বলে জানান রেলমন্ত্রী।
তিনি বলেন, দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল ট্রেন ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা, চাঁদপুর স্পেশাল-১ ও ২ ট্রেন চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রুটে ঈদের আগে তিন দিন ও ঈদের পরের দিন থেকে পাঁচ দিন চলাচল করবে। পঞ্চগড় ঈদ স্পেশাল ট্রেন জয়দেবপুর-বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেশন (পঞ্চগড়)-জয়দেবপুর রুটে ঈদের আগে তিন দিন এবং ঈদের পরের দিন থেকে চার দিন চলাচল করবে। এ ছাড়া শোলাকিয়ায় স্পেশাল-১ ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ভৈরব এবং শোলাকিয়ায় স্পেশাল-২ ময়মনসিং-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটে শুধু ঈদের দিন চলবে।
রেলমন্ত্রী জানান, আগামী ৬ থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত ঢাকামুখী একতা, দ্রুতযান, পঞ্চগড়, নীলসাগর, কুড়িগ্রাম, লালমনি ও রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনগুলোর বিমানবন্দর স্টেশনে যাত্রাবিরতি থাকবে না। আগামী ৬ থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে চলমান মিতালী এক্সপ্রেস এবং ৭ থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত মৈত্রী এক্সপ্রেস ও বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করবে না।
থাকছে ‘ক্যাটেল স্পেশাল’ ট্রেন
নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে পূর্বাঞ্চলে দেওয়ানগঞ্জ বাজার রেলওয়ে স্টেশন ও পশ্চিমাঞ্চলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকা পর্যন্ত কোরবানির পশু পরিবহনের জন্য ‘ক্যাটেল স্পেশাল’ ট্রেন চলবে। ঈদের অতিরিক্ত চাহিদা মেটানোর জন্য মোট ৬৭টি যাত্রীবাহী কোচ সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। অতিরিক্ত চাহিদা মেটানোর জন্য মোট ২১৩টি (পূর্বাঞ্চল ১০৮টি ও পশ্চিমাঞ্চলে ১০৫টি) লোকোমোটিভ যাত্রীবাহী ট্রেন ব্যবহারের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্মসনদে মিলবে টিকিটিরেলমন্ত্রী বলেন, আমরা গতবারই সিদ্ধান্ত নিয়েছি ‘টিকিট যার ভ্রমণ তার’। এই নীতিতেই এবারও ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হবে। এটা নিশ্চিত করতে পারলে টিকিট কালোবাজারি বন্ধ হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এবারও জাতীয় পরিচয়পত্র কিংবা জন্মসনদের ফটোকপি দিয়ে টিকিট করতে হবে বলে জানান তিনি।
ফেরত নেয়া হবে না অগ্রিম টিকিটঈদের অগ্রিম টিকিট ফেরত নেয়া হবে না জানিয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘মোবাইল এবং ইন্টারনেটে ই-টিকেটিংয়ের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি শুরু হবে সকাল ৮টা থেকে। আর কাউন্টারে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ঈদের টিকিট বিক্রি করা হবে। একজন যাত্রী সর্বোচ্চ চারটি টিকিট কিনতে পারবেন বলে জানান তিনি।
ফিরতি টিকিটঈদ-পরবর্তী টিকিট বিক্রি প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী জানান, ঈদের পরে ৭ থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ৭ জুলাই ১১ জুলাইয়ের, ৮ জুলাই ১২ জুলাইয়ের, ৯ জুলাই ১৩ জুলাইয়ের এবং ১১ জুলাই ১৪ ও ১৫ জুলাইয়ের টিকেট বিক্রি করা হবে।