চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে সাংসদ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর সমালোচনা করায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রুস্তম আলীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
তার মুক্তির দাবিতে বুধবার বিক্ষোভ করেছেন ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা। তবে মামলা নিজের পরামর্শে হয়নি দাবি করে সাংসদ নজিবুল বশর জানিয়েছেন তিনি বাদীকে চেনেন না।
মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মোহাম্মদ জহিরুল কবিরের বেঞ্চ রুস্তমকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলেও বুধবার বিষয়টি জানাজানি হয়।
রুস্তম আলী বাগানবাজার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। তাকে কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী কামরুল হাসান।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারি ফটিকছড়ির বাগানবাজার ইউনিয়নে একটি মসজিদে আয়োজিত মাহফিলে স্থানীয় সাংসদ নজিবুল বশরের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও অপমানজনক বক্তব্য দেয়ার অভিযোগ ওঠে রুস্তমের বিরুদ্ধে। ওই বক্তব্যের ভিডিওটি একটি ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয়।
ওই বছরের ৭ এপ্রিল দুপুরে ফেসবুক ও ইউটিউবে বক্তব্যটি দেখে পরদিন ভুজপুর থানায় রুস্তম আলীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন ওমর ফারুক নামে এক ব্যক্তি। সে সময় রুস্তম আলী বাগানবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।
নিজেকে সাংসদের দল তরিকত ফেডারেশনের অনুসারী দাবি করা ওমর ফারুক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২০২০ সালে বাগানবাজার ইউনিয়নের মতিননগর জামে মসজিদে বক্তব্য দেয়ার সময় আমাদের সাংসদ ও মাইজভান্ডার শরীফকে জড়িয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন রুস্তম। আমি ফেসবুকে বক্তব্যটি দেখে মাইজভান্ডার শরীফের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও এমপির সঙ্গে কথা বলে মামলাটি করেছি।’
বক্তব্যটি কী ছিল জানতে চাইলে ওমর ফারুক বলেন, ‘ উনি (রুস্তম) বলছিলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে বাজেটগুলো দেন, সেগুলো নাকি আমাদের এমপি মহোদয় সব খেয়ে ফেলেন।’
এদিকে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান রুস্তম আলীকে কারাগারে পাঠানোয় তীব্র নিন্দা ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগ। তার মুক্তির দাবিতে ফটিকছড়িতে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এ টি এম পেয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে বিক্ষোভ করেছে ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগ।
এ বিষয়ে ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দীন মুহুরি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘উনি (রুস্তম) কোনো এক মাহফিলে গতানুগতিক কথা বলেছেন। এটা সমালোচনা। কটূক্তি না। এই কারণে রুস্তম আলীর প্রতিদ্বন্দ্বী সাজু (বর্তমান চেয়ারম্যান) ও উপজেলা চেয়ারম্যান মিলে মামলাটি করিয়েছিল। সাংসদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে, মামলার বাদীকে তিনি চেনেন না বলেছেন।’
সাংসদ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার সঙ্গে বাদীর কখনও দেখাই হয়নি। এটা লোকাল পলিটিকস। রুস্তম বা তার পক্ষের কেউ যদি আমার সঙ্গে দেখা করত, তাহলে আমি বাদীকে পুলিশ দিয়ে খুঁজে বের করে মামলা তুলিয়ে নিতাম। কিন্তু কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।’