বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বন্যার মধ্যেও ডাকাত আতঙ্ক

  •    
  • ২২ জুন, ২০২২ ১৩:২০

অষ্টগ্রাম সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার সামুয়েল সাংমা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জেনেছি। এ বিষয়ে গ্রাম পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশের সদস্যদের একটিভ করা হবে। প্রয়োজনে প্রতিটি গ্রামে একটি করে টিম গঠন করা হবে। গ্রাম পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশের পাশাপাশি থানা পুলিশেরও টহল থাকবে।’

উজানের পাহাড়ি ঢল আর কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে সড়ক, পানি উঠেছে বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ দোকানপাটে। হাওরে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শনিবার রাত থেকে করিমগঞ্জ ও ইটনা উপজেলার ১৫টি গ্রামে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে জেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।

বন্যায় দুর্ভোগের শেষ নেই এখানকার বাসিন্দাদের। এরই মধ্যে হাওরে ছড়িয়ে পড়েছে ডাকাত আতঙ্ক। মসজিদে মসজিদে মাইকিং করে সতর্ক করা হয়েছে গ্রামবাসীকে।

মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে কিশোরগঞ্জের ইটনা, মিঠামইন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে এ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রাতেই প্রত্যেক মসজিদে মাইকিং করে সতর্ক থাকতে বলা হয় গ্রামের বাসিন্দাদের।

ইটনা উপজেলার ছিলনী গ্রামের মেহেদী হাসান, হাসিব রহমান, মো. নবেলসহ বেশ কয়েকজন মোবাইলে মেসেজ এবং ফোন করে এসব তথ্য জানান এ প্রতিবেদককে।

মেহেদী হাসান বলেন, ‘বন্যার কারণে বাড়ির চারদিকে পানি। দুর্ভোগের শেষ নেই। মানুষ যে কতটা বিপদে আছে, সেটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। এরই মধ্যে আবার ডাকাত আতঙ্ক। আমরা লাইট আর লাঠি হাতে নিয়ে গ্রাম পাহাড়া দিচ্ছি। এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘাঁ।’

মো. নবেল বলেন, ‘রাত দেড়টার দিকে আমাদের পাশের গ্রাম শান্তিপুর মসজিদের মাইকে ঘোষণা শোনা যায়, এলাকায় ডাকাত ঢুকেছে। সবাই সজাগ হোন, আপনারা সবাই নিজ নিজ বাড়ির সামনে লাইট এবং লাঠি নিয়ে প্রস্তুতি নিন।

‘সেখানকার মসজিদে এ ঘোষণা শুনেই ডাকাত চলে আসে আমাদের গ্রামে। পরে আমরাও সবাই প্রস্তুুতি নেই। এ সময় আমাদের মসজিদের মুয়াজ্জিন সাহেবও মাইকে ঘোষণা দেন। মসজিদের মাইকে ঘোষণা শুনে আর আমাদের প্রস্তুতি টের পেয়ে ডাকাতরা দ্রুত চলে যায় অন্যদিকে।’

হাসিব রহমান বলেন, ‘রাত দেড়টার দিকে মাত্র ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, তখনই মসজিদের মাইকে ঘোষণা শুনতে পাই এলাকায় ডাকাত পড়েছে। আপনারা সবাই সজাগ হোন, প্রস্তুতি নিন। এই ঘোষণা শুনে ঘুম শেষ। ঘর থেকে বের হয়ে শুনি আশেপাশের প্রত্যেকটি গ্রামের মসজিদেই এমন মাইকিং।’

তাদের সঙ্গে কথা শেষ হতেই আরেক ইউনিয়ন জয়সিদ্দি থেকে আল-আমিন নামে আরেকজন এ প্রতিবেদককে মেসেজ পাঠান ‘তাদের গ্রামের আশেপাশেও ডাকাতরা ঘুরতেছে।’

তিনি বলেন, ‘এমনিতেই বন্যার পানিতে সবাই একটা দুর্দশার মধ্যে আছি। বাড়িঘরের বিভিন্ন জায়গায় পানি ওঠেছে। নিজেদের গবাদিপশু নিয়েও খুব আতঙ্কে আছি। সামনে ঈদ, একটা গরু নিয়ে গেলে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।’

রাত আড়াইটার দিকে মিঠামইন উপজেলার ঢাকী ইউনিয়নের মামুদপুর গ্রামের বাসিন্দা জিতু চৌধুরী জানান, তারা সবাই সজাগ। চারদিকে ডাকাত আতঙ্কে তাদের চোখে ঘুম নেই।

তিনি বলেন, ‘এ ইউনিয়নের চকেশ্বর, গোবিন্দপুর, কোলাহানি, বালিবন, আতপাশা, মামদপুর প্রত্যেকটি গ্রামের মসজিদে মসজিদে মাইকিং হচ্ছে। মাইকিং শুনে ঘর থেকে বের হয়ে দেখি হাওরের মাঝখানে দুটি নৌকা ঘুরতেছে। তখন আমরাও তাদের দিকে লাইট ধরি। পরে আমরা সবাই সজাগ আছি বুঝতে পেরে তারা অন্য দিকে চলে যায়।’

অষ্টগ্রাম সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার সামুয়েল সাংমা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জেনেছি। এ বিষয়ে গ্রাম পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশের সদস্যদের একটিভ করা হবে। তারা যেন সজাগ থাকে এবং বিভিন্ন সময়ে গ্রামবাসীকে সতর্ক করে করে দেয়।

‘প্রয়োজনে প্রতিটি গ্রামে একটি করে টিম গঠন করা হবে। গ্রাম পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশের পাশাপাশি থানা পুলিশেরও টহল থাকবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর