বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বন্যা মাথায় রেখে সেতু, কালভার্ট নির্মাণ: প্রধানমন্ত্রী

  •    
  • ২২ জুন, ২০২২ ১১:৫৯

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জায়গাগুলো চিহ্নিত হয়েছে কোথায় কোথায় পানি নামে দ্রুত। সেগুলো আমি চিহ্নিত করে রাখতে বলেছি। সেখানে আমরা ব্রিজ, কালভার্ট এমনভাবে করে দেব, যাতে আগামীতে কোথাও পানি জমে না থাকতে পারে। সেই নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

বন্যার পানি দ্রুত নামার সুবিধার্থে প্রয়োজনে সড়ক কেটে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, যেসব জায়গা দিয়ে বন্যার পানি দ্রুত নামে, সেগুলোতে সেতু, কালভার্ট এমনভাবে করে দেয়া হবে, যাতে কোথাও জলাবদ্ধতা তৈরি না হয়।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বুধবার সংবাদ সম্মেলনের প্রারম্ভিক বক্তব্যে সরকারপ্রধান এসব কথা বলেন।

এক মাসের কম সময়ে সিলেট ও সুনামগঞ্জ আবার প্লাবিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন পরিসরে কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, পানি অপসারণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে সেতুর মতো বিভিন্ন স্থাপনা। বন্যাপ্রবণ অঞ্চলে স্থাপনা নির্মাণে সেখানকার প্রতিবেশকে গুরুত্ব দেয়ার দাবিতেও অনেকে সোচ্চার হয়েছেন।

এমন বাস্তবতায় দেয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পানি যাতে দ্রুত নামতে পারে, সে জন্য প্রয়োজনে রাস্তা কেটে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির উন্নয়ন হলে সেগুলো সংস্কার করা হবে।

‘জায়গাগুলো চিহ্নিত হয়েছে কোথায় কোথায় পানি নামে দ্রুত। সেগুলো আমি চিহ্নিত করে রাখতে বলেছি। সেখানে আমরা ব্রিজ, কালভার্ট এমনভাবে করে দেব, যাতে আগামীতে কোথাও পানি জমে না থাকতে পারে। সেই নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

দেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, বর্তমানে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দুই জেলা সিলেট ও সুনামগঞ্জ। সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার এবং হবিগঞ্জও বন্যায় প্লাবিত। এ ছাড়া উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, জামালপুর, শেরপুরসহ ১১টি জেলা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বর্ষাকাল শুরু হয়েছে। এ সময় বন্যা হবে, এটাই স্বাভাবিক। স্বাভাবিক বন্যা আমাদের কাঙ্ক্ষিত। বন্যার পানি আমাদের কৃষিজমিকে উর্বর এবং সতেজ করে; ময়লা, আবর্জনা, জঞ্জাল ধুয়েমুছে সাফ করে নিয়ে যায়।

‘এ ধরনের বন্যার সঙ্গে বসবাস করতে আমাদের দেশের মানুষ অভ্যস্ত। স্বাভাবিক মাত্রার বন্যা মোকাবিলা করার সক্ষমতাও আমাদের সরকারের রয়েছে।’

ভারতে ভারি বর্ষণের কথা উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে। তিনি বলেন, ‘মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে তিন দিনে ২ হাজার ৫০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত শুক্রবার পর্যন্ত পূর্বের ২৪ ঘণ্টায় ৯৭২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। সিলেটবাসীর বক্তব্য হচ্ছে ১২২ বছরের মধ্যে এ ধরনের বৃষ্টিপাত বা বন্যা দেখেনি। মেঘালয় ও আসাম পাহাড়ি এলাকা। ফলে বৃষ্টির পানি নেমে আসছে। সুনামগঞ্জ-সিলেটে প্রবেশ করে প্লাবিত হয়েছে।

‘যেহেতু বর্ষাকাল, পানি আসতে আসতে আমাদের দক্ষিণাঞ্চলটাও প্লাবিত হবে। সেটা অবশ্য শ্রাবণ, ভাদ্র মাসের দিকে পানিটা আসে। কাজেই আমাদের এভাবে তৈরি থাকতে হবে। এভাবে যখন পানি আসছে, সেটা আসবে। এবার সব থেকে ভয়াবহ একটা বন্যা পেয়েছি। এটা মোকাবিলা করার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।

‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঠেকানোর ক্ষমতা মানুষের নেই, তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে মানুষের ক্ষতি যাতে না হয়, সেটা আমাদের দেখা দরকার।’

ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা কার্যক্রম নিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘বন্যাকবলিত সিলেট অঞ্চলে ১ হাজার ২৮৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ৩০০ মেডিক্যাল টিম কাজ করছে। গতকাল পর্যন্ত বন্যাকবলিত ১১টি জেলায় ৯০০ টন চাল এবং ৩ কোটি ৩৫ লাখ নগদ টাকা এবং ৫৫ হাজার শুকনা এবং অন্যান্য খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে যেটা সবচেয়ে বেশি দরকার, তা হলো শুকনো খাবার এবং বিশুদ্ধ পানির।

‘পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের কথাও বলেছি। আমাদের দলের নেতা-কর্মীরাও সাধ্যমতো দুর্গত মানুষের ঘরে শুকনো এবং রান্না করার খাবার পৌঁছে দিচ্ছে।’

বন্যার পানি নেমে গেলে করণীয় কী, তা নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় পানি কমতে শুরু করেছে। আশা করা হচ্ছে দুই-এক দিনের মধ্যে পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হবে। বন্যার পানি নেমে গেলে বাড়িঘর মেরামত এবং কৃষি পুনর্বাসনের কর্মসূচি হাতে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছি। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাজের নির্দিষ্ট করে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

‘বন্যাকবলিত এলাকার মানুষকে শুধু এটুকু বলতে চাই যে, আমরা আছি সবসময় তাদের পাশে। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করব, যাতে তাদের কষ্ট না হয়। সে ব্যবস্থাটা আমরা করব।’

এ বিভাগের আরো খবর