তিস্তার পানি দুর্ভোগে ফেলেছে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ১৫টি চরের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষকে। গত দুই দিন তিস্তায় পানি বাড়ার ফলে নদীবেষ্টিত এলাকাগুলো তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার ২৫০ পরিবার আশ্রয় নিয়েছে উঁচু স্থানে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিস্তাপাড়ের মানুষকের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলেছে কর্তৃপক্ষ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আসাফ উদ দৌলা জানান, তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট দিয়ে উজানের ঢলের পানি প্রতি মিনিটে সাড়ে চার লাখ কিউসেক করে ভাটির দিকে আসছে। এই বাইপাস অতিরিক্ত হলে ফ্লাড ফিউজ অটোমেটিক ওপেন হয়ে যায়। তিস্তা ব্যারাজ হুমকির মুখে পড়ে। তবে এখনও সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি বলে জানান তিনি।
এ অবস্থায় তিস্তা এলাকায় লাল সংকেত জারি না করলেও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং চর ও অপেক্ষাকৃত নিচু গ্রামগুলোতে বসবাসরত পরিবারগুলোকে মাইকিং করে নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছে।
ডালিয়া বন্যা পূর্বাভাস নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সারা দিন তিস্তা নদীর ব্যারেজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এদিন সন্ধ্যা ৬টায় ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়।
এর ফলে ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার ১৫টি চরের গ্রাম ও ফসলি জমি উজানের ঢলে তলিয়ে গেছে। ফসলি জমি, গবাদিপশুসহ ঘরবাড়ির দুশ্চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে পানিবন্দি পরিবারগুলো।
টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের বেড়িবাঁধে আশ্রয় নেয়া গৃহবধূ সুমি আক্তার বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে ঘুমিয়ে ছিলাম। পানির শোঁ শোঁ শব্দে ঘুম ভেঙে জেগে দেখি ঘরের মেঝেতে কোমরপানি। আঙিনায় বুকসমান। ৬ মাস বয়সী সন্তানকে কোলে নিয়ে কোনো রকমে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছি। অল্পের জন্য বেঁচে গেছি।’
মঙ্গলবার বিকেলে তিস্তায় বন্যার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন। খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৪০০ পবিরারের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করেন তিনি।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবুল কালাম বলেন, ‘দুই উপজেলায় পানিবন্দি হিসেবে ২ হাজার ৭৫০ পরিবারের তালিকা এসেছে। দুই দফায় ২৫০০ পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে চাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। নগদ তিন লাখ টাকাও বিতরণ করা হয়েছে।’