টাঙ্গাইল শহরের বেড়াডোমা এলাকায় লৌহজং নদীর ওপরে ধসে পড়া নির্মাণাধীন সেতু ঠিকাদার নিজ খরচে ভেঙে নতুন করে নির্মাণ কাজ করতে হবে।
ধসে পড়া সেতুটি মঙ্গলবার বেলা ১১টায় পরিদর্শন শেষে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক একেএম রশিদ আহম্মদ এ কথা জানান। এ সময় তার সঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তারাও ছিলেন।
প্রকল্প পরিচালক জানান, ধসে পড়া সেতুটির ৫৫ শতাংশ কাজ এগিয়েছিল এ অবস্থায় কয়েক ধাপে ৬০ শতাংশ বিল পরিশোধ করা হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। এখন নিজ খরচে ধসে পড়া সেতুটি তাদের ভাঙতে হবে। নির্মাণ পুনরায় সম্পূর্ণ শেষ হওয়ার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বাকি বিল পরিশোধ করা হবে।
পৌরসভা সূত্র জানায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের আওতায় টাঙ্গাইল পৌরসভা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে সেতুটি নির্মাণ হচ্ছিল। আট মিটার প্রস্থ ও ৪০ মিটার দৈর্ঘের সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে তিন কোটি ৬০ লাখ ১৮ হাজার।
ঢাকার ব্রিকস অ্যান্ড ব্রিজ লিমিটেড এবং দি নির্মিতি নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কাজটি নির্মাণের টেন্ডার পায়। ২০২০ সালের ৫ নভেম্বর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সেতু নির্মাণের চুক্তি হয়।
পৌরসভার কর্মকর্তারা জানান, টাঙ্গাইল সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আমিরুল ইসলাম খান ও ছয় নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা জামিলুর রহমান খানের নেতৃত্বে স্থানীয় ১০ নেতাকর্মী কাজটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নিয়ে নেন। পরে তারা নির্মাণ শুরু করেন।সেতু নির্মাণের তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত টাঙ্গাইল পৌরসভার প্রকৌশলীরা জানান, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তারা মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কাজটি নিয়েছিলেন। সেতুটি নির্মাণ কাজে ছিল অবহেলা। তাদের মৌখিক ও লিখিতভাবে একাধিকবার নোটিশ দেয়া হলেও তারা শিডিউলের নির্দেশনা মানেননি। বিভিন্ন স্তরে দরপত্রে উল্লেখিত নির্দেশনা মোতাবেক কাজ না করে তারা নিজেদের খেয়ালখুশিমত কাজ করছিলেন।ব্রিকস অ্যান্ড ব্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মোস্তফা মুহাম্মদ মাসুদ জানান, তারা এবার নিজেদের তত্ত্বাবধানে সেতুটি পুনরায় নির্মাণ করবেন। তাদের সঙ্গে টাঙ্গাইলের ঠিকাদাররাও থাকবেন। আগের মতো সাব ঠিকাদারদের ওপর নির্মাণ কাজ ছেড়ে দেবেন না।
তিনি জানান, আগে এ নিয়ে কিছু বলতে পারিনি কিন্তু এখন জবাব দেবার সুযোগ এসেছে। সেতুটি নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব কিছুই তার নিয়ন্ত্রণেই থাকবে।
মুহাম্মদ মাসুদ আরও জানান, দ্রুত সময়ের মধ্যেই সেতুটি ভেঙে পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। কর্তৃপক্ষ যদি এ বিষয়ে কোন অঙ্গীকারনামা চান তাহলে তাই দেয়া হবে। আর সেতুটি পুনরায় নির্মাণের সময় দরপত্রে উল্লেখিত সব শর্ত মেনেই কাজ করা হবে।
টাঙ্গাইল পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমী জানান, ধসে পড়া সেতুটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণ হবে। তবে সেতুটি ভাঙতে সব ব্যয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বহন করবে। সব নির্দেশনা মেনে সেতুটি যেনো দ্রুত পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরু করে, সেজন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অঙ্গীকারনামা প্রদান করবে।