বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নেত্রকোণায় ভেসে গেছে ১০০ কোটি টাকার মাছ

  •    
  • ২১ জুন, ২০২২ ১৮:২২

সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলার অন্তত ২৫ হাজার বাণিজ্যিক ও অবাণিজ্যিক পুকুরের মাছ বানের জলে ভেসে গেছে। ২২৩টি গবাদিপশুর খামার এবং ৪৪২টি হাঁস-মুরগির খামার বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া পানিতে নিমজ্জিত হয়ে নষ্ট হয়েছে ১ হাজার ৯১ হেক্টর জমির ধান, পাট ও সবজিজাতীয় ফসল।

চলমান বন্যায় নেত্রকোণার ১০ উপজেলায় মৎস্য, প্রাণিসম্পদ ও কৃষিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলার অন্তত ২৫ হাজার বাণিজ্যিক ও অবাণিজ্যিক পুকুরের মাছ বানের জলে ভেসে গেছে। ২২৩টি গবাদিপশুর খামার এবং ৪৪২টি হাঁস-মুরগির খামার প্লাবিত হয়েছে।

এ ছাড়া পানিতে নিমজ্জিত হয়ে নষ্ট হয়েছে ১ হাজার ৯১ হেক্টর জমির ধান, পাট ও সবজিজাতীয় ফসল।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহজাহান কবির নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, বন্যায় দুর্গাপুর, কলমাকান্দা, মোহনগঞ্জ ও বারহাট্টাসহ ১০ উপজেলার প্রায় ১১ হাজার টন মাছ ভেসে গেছে, যার আর্থিক মূল্য ১০০ কোটি টাকার বেশি।

মোহনগঞ্জ উপজেলা মৎস্য অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এ উপজেলার ২ হাজার ৪০টি বাণিজ্যিক ও অবাণিজ্যিক পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৭০ লাখ টাকা। খালিয়াজুরীতেও পুকুর ডুবেছে ৪১৪টি।

কলমাকান্দার নাজিরপুর এলাকার মৎস্যচাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার তিনটি পুকুরে প্রায় ১২ লাখ টাকার মাছ ছিল। এক রাতের বন্যায় সব ভেসে গেছে। এত বড় বন্যা হবে, তা এক দিন আগেও টের পাইনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার সমস্ত পুঁজি মাছ চাষে বিনিয়োগ করেছিলাম। সব শেষ হয়ে গেছে।’

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. শহীদুল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বন্যায় ১০ উপজেলার ২২৩টি গরু-ছাগলের খামার এবং ৪৪২টি হাঁস-মুরগির খামার প্লাবিত হয়েছে। এতে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে আনুমানিক ৪ কোটি টাকা।

‘এ ছাড়া ২১ লাখ টাকার দানাদার পশুখাদ্য, ১ কোটি ৪৪ লাখ টাকার খড় নষ্ট হয়েছে। চারণভূমি প্লাবিত হয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার একর। সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৭ কোটি টাকা।’

এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘ধানের খড়ের পুঞ্জি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় হাওরাঞ্চলের কৃষকরা সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়বেন। কারণ বর্ষার পানি না কমা পর্যন্ত তাদের গবাদিপশুকে বাজার থেকে খাবার কিনে খাওয়াতে হবে।’

আসন্ন কোরবানির পশুর হাটেও বন্যার প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন এ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘বাড়িঘরে পানি এবং খাদ্যসংকটের কারণে অনেকে গবাদিপশু বাজারে সস্তায় বেচে দিতে পারেন। তাদের বেচে দেয়া গবাদিপশু মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে চলে যেতে পারে। এ কারণে আগামী কোরবানির পশুর হাট তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

‘এ ছাড়া যারা গবাদিপশু মোটাতাজাকরণের ব্যবসা করেন, তারাও ক্ষতির মুখে পড়বেন। কারণ পর্যাপ্ত খাবার না পেলে পশুর স্বাস্থ্য নষ্ট হয়ে যাবে। এতে দাম কম পাবেন তারা’ বলেন তিনি।

খালিয়াজুরীর বলরামপুর গ্রামের হাঁস খামারি রইছ মিয়া বলেন, ‘আমার খামারে প্রায় ৪০০ হাঁস আছে। এগুলোকে আগে হাওরের পানিতে ছেড়ে দিয়ে প্রাকৃতিক খাবার খাওয়াতাম। এখন বন্যা পরিস্থিতির কারণে ছাড়তে পারছি না। খামারে রেখে ধান খাওয়াতে হচ্ছে।

‘এক মণ ধান কিনতে হচ্ছে ৭৫০ টাকায়। প্রাকৃতিক খাবারের অভাবে ডিম উৎপাদনও কমে গেছে। এর ওপর হাঁসের রোগবালাইয়েরও ভয় আছে।’

মোহনগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাখাওয়াত হোসেন জানান, তার উপজেলার ৩ হেক্টর জমির আউশ ধান, ১০০ হেক্টর জমির পাট এবং ৫০ হেক্টর জমির সবজি সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতির আর্থিক মূল্য প্রায় ২৫ লাখ টাকা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) শাহজাহান সিরাজ বলেন, ‘এবারের বন্যায় ১০ উপজেলার ৫৬৪ হেক্টর জমির আউশ ধান, ১৭০ হেক্টর জমির পাট এবং ৩৫৭ হেক্টর জমির শাকসবজি নষ্ট হয়েছে। এতে উৎপাদনে প্রভাব পড়ার পাশাপাশি কৃষকরাও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন।’

এ বিভাগের আরো খবর