দুটি সেতুর লোহালক্কড় ভাঙারির কাছে বেচে দেয়াসহ নানা অভিযোগে ঝালকাঠি সদরের পোনাবালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল বাসার খানকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ ইউপি-১ শাখা থেকে ১৬ জুন এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমিন প্রধানের সই করা প্রজ্ঞাপনের কপি সোমবার বিকেলে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পৌঁছেছে। মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপনের কপি আসে নিউজবাংলার কাছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পোনাবালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল বাসার খানের অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিষদসহ জনস্বার্থের পরিপন্থি। এই বিবেচনায় এবং স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন অনুযায়ী ওই ইউপি চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, তদন্তে ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বাসার খানের বিরুদ্ধে ৯টি অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে।
অভিযোগগুলো হলো, ট্যাক্সের ৩ বছরের ১২ লাখ ৮২ হাজার ৩৫০ টাকা আত্মসাৎ, করোনাকালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ ত্রাণের চাল আত্মসাৎ, করোনাকালে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে অসহায় মানুষের জন্য বরাদ্দ বিতরণে অনিয়ম, এলজিএসপি-৩-এর প্রাপ্ত বরাদ্দ থেকে তথ্য সেবা কেন্দ্রের মালামাল ক্রয়ের অর্থ আত্মসাৎ,
২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ফটোকপি মেশিন ক্রয়ের ৯০ হাজার টাকা আত্মসাৎ, করোনা টিকা কার্যক্রমের সময়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের আপ্যায়নের ৩৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ, ট্রেড লাইসেন্স, ওয়াসির সনদ, অটোরিকশার লাইসেন্স ফি বাবদ ৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ, প্রাক্তন ইউপি সচিবকে দিয়ে পরিষদের রেজুলেশনসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে পাবলিক হেলথ থেকে ২০ সেট রিং ও স্লাব ইউপি সদস্যদের না জানিয়ে বিতরণ।
সম্প্রতি দুটি লোহার সেতুর মালামাল ভাঙারির কাছে বেচে দেয়ার অভিযোগ ওঠে চেয়ারম্যান বাসারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার প্রতিবেদন চলতি বছরের ২৪ মে নিউজবাংলায় প্রকাশিত হয়।
পোনাবালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য নান্না খলিফা বলেন, ‘চেয়ারম্যান আবুল বাসার খানের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ সত্য। তার এই বহিষ্কার আদেশে ইউনিয়নবাসী খুশি।’
এ বিষয়ে পোনাবালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বাসার খান বলেন, ‘আগামী বছর এই ইউনিয়নে নির্বাচন। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আমাকে ফাঁসানোর জন্য মন্ত্রণালয়ে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। আমি এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করব।’
২০১৮ সালের ১৫ মে ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন আবুল বাসার খান।