উজানের পাহাড়ি ঢল আর কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ পানিতে তলিয়ে গেছে সড়ক, পানি উঠেছে বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ দোকানপাটে। এরই মধ্যে ভেসে গেছে পাঁচ শতাধিক মৎস্য খামার। খামারিদের দাবি, এতে তাদের ক্ষতি হয়েছে প্রায় তিন কোটি টাকা।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কৃষিবিদ রিপন কুমার পাল মঙ্গলবার নিউজবাংলাকে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘এখনও চূড়ান্ত কোনো হিসাব করা হয়নি, তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, জেলায় মৎস্য খামারিদের প্রায় তিন কোটির মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রতিদিনই ক্ষতির পরিমাণ কেবল বেড়েই চলেছে।’
প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।
জেলা মৎস্য অফিস জানায়, জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম, নিকলী, তাড়াইল, বাজিতপুর, ভৈরব এ ৭টি উপজেলার খামারিরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইটনা সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা এনায়েত কবীর বলেন, ‘বাড়ির পাশে যে পুকুরটিতে মাছ চাষ করেছিলাম, কল্পনাও করিনি এখানে পানি উঠবে। আমার পুকুরের বেশির ভাগই মাছের পরিমাণ ছিল ৮০০ গ্রাম থেকে ৯০০ গ্রাম। আর কয়েকদিন পরেই পুকুর থেকে তুলে বিক্রি করতাম। কিন্তু বন্যার পানিতে সব বেরিয়ে গেছে।’
তিনি জানান, স্থানীয় শামীম হোসেন, তাপস রায় ও শানু মিয়ার পুকুরের মাছও বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। সবমিলিয়ে তাদের ১৫ লাখ টাকার মত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ইটনা উপজেলার জয়সিদ্দি ইউনিয়নের বাসিন্দা মো.নুরু মিয়া। হাওরের সবচেয়ে বড় চাষের পুকুরটি তার।
পুকুরের চারদিকে পাড় ডুবে গেছে। বহু কষ্ট করে পুকুরের চারপাশে জাল দিয়ে আটকিয়ে রেখেছেন। যেভাবে বাতাস আসে যেকোনো মুহূর্তেই পুকুরের মাছ বেরিয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন তিনি।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কৃষিবিদ রিপন কুমার পাল বলেন, ‘আমরা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। সেই সঙ্গে এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। সরকারি কোনো সহায়তা পেলে উপজেলাভিত্তিক খামারিদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।’