শরীয়তপুরের জাজিরায় মল খাইয়ে নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলার আবেদন করেছেন এক নারী। জাজিরা থানায় ১৯ জুন মামলার আবেদন করেন জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের ওই নারী।
পুলিশ বলছে, প্রাথমিক তদন্ত শেষে সত্যতা পেলে তারা অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করবেন।
মামলার আবেদনে ওই নারী বলেন, আট বছর আগে জাজিরার আলমখার কান্দি গ্রামের জয়নাল কবিরাজের সঙ্গে তিনি তার মেয়ের বিয়ে দেন। জয়নাল মাদকাসক্ত হওয়ায় ও পারিবারিক কলহের কারণে বিয়ের কয়েক মাস পরই তিনি স্থানীয় সালিশের মাধ্যমে মৌখিক বিয়েবিচ্ছেদ ঘটিয়ে আসেন।
তবে এই ‘বিচ্ছেদ’ মেনে নেয়নি জয়নাল ও তার পরিবার। বিরোধ মীমাংসার কথা বলে ১৬ জুন রাতে জয়নালের মামা মালেক মাদবর মেয়েটির মা ও বাবাকে নিজ বাড়িতে ডেকে নেন। সেখানে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে রাত ১১টার দিকে মালেক ও তার সহযোগীরা জয়নালের শাশুড়িকে আটকে রেখে তার স্বামীকে বের করে দেন।
এরপর তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে পাশের টয়লেট থেকে বোতলে ভরে মল এনে মুখে ঢেলে দেন মালেক। এতে ওই নারী অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে স্বামীর হাতে তুলে দেয়া হয়।
ওই নারী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নদীভাঙনে সব হারিয়ে আমরা পদ্মার একটি চরে আশ্রয় নেই। দীর্ঘদিন ধরে চরেই থাকছি। আর্থিক অসচ্ছলতায় বাধ্য হয়ে মেয়ের বিয়ে দেই। বিয়ের পর থেকেই জয়নাল নেশা করে আমার মেয়েকে নির্যাতন করত।
‘একপর্যায়ে মেয়েকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসি। তার পর থেকেই ওদের সঙ্গে বিরোধ শুরু হয়। মীমাংসার কথা বলে মালেক তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে আমাকে মল খাইয়ে দিয়েছে। ওরা আমার শরীরেও হাত দিয়েছে।’
তার অভিযোগ, ১৯ জুন থানায় মামলা দিলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
মল খাওয়ানোর অভিযোগ স্বীকার করে মালেক বলেন, ‘ওই নারীর (জয়নালের শাশুড়ি) সঙ্গে অশুভ শক্তি আছে। তিনি এলাকায় কবিরাজি করে তাবিজ-কবজ দেন। মেয়েদের ক্ষতি করেন। আমার এক মেয়েকেও তাবিজ দিয়ে ক্ষতি করেছেন।
‘তাই গ্রামের মানুষের সঙ্গে মিলে তার অশুভ শক্তি নির্মূল করতে মানুষের মল খাওয়ানো হয়েছে।’
এ বিষয়ে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এক নারীকে মানুষের মল খাওয়ানো হয়েছে এমন একটি অভিযোগ পেয়েছি। সেটি তদন্ত করা হচ্ছে। সত্যতা পেলে মামলার আবেদন নথিভুক্ত করা হবে।’