ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফেনীর ফুলগাজী ও পশুরামের মুহুরী নদীর চারটি স্থানে বাঁধ ভেঙে গেছে। ভাঙনকবলিত স্থান দিয়ে পানি ঢুকে এখন পর্যন্ত ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
নদী থেকে পানির গতি কিছুটা কমলেও উঁচু এলাকা থেকে পানি নিচের দিকে প্রবাহিত হওয়ায় নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। এতে ফুলগাজীর সাতটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহির উদ্দিন জানান, মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যেটি সোমবার ছিল ১২৩ সেন্টিমিটার।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুন্নাহার জানান, উঁচু এলাকা থেকে পানি নিচের দিকে নামায় নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। ফুলগাজীতে ৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
স্কুলগুলো হলো জয়পুর আলহাজ নুরুল হক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর দৌলতপুর একরাম নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেড়পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম ঘনিয়ামোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিসমত ঘনিয়ামোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বৈরাগপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ দৌলতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর দৌলতপুরের একটি স্থানে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে উত্তর দৌলতপুর, মধ্যম দৌলতপুর ও দক্ষিণ দৌলতপুর, কিসমত ঘনিয়ামোড়া, বরইয়া এবং দেড়পাড়ায় আরেকটি স্থান ভেঙে দেড়পাড়া, নিলক্ষী, উত্তর শ্রীপুর, দক্ষিণ শ্রীপুর, ঘোষাইপুর গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
পানির তোড়ে ভাঙনকবলিত গ্রামের অনেক বসতঘর, পুকুরের মাছ ও বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুম এলে অতি বর্ষণে ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ওই সব স্থান দিয়ে নদীর বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে তাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এতে ঘরবাড়ি, শত শত পুকুরের মাছ ও ফসল পানির তোড়ে ভেসে যায়।
স্থানীয় একজন অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রতিবছর ভাঙন স্থান নামমাত্র মেরামত হলেও বাঁধের কোনো স্থায়ী সমাধান হয় না। ভাঙনকবলিত এলাকায় কোনো সাহায্য নয়, বাঁধের স্থায়ী সমাধান চাই।’