বন্যার ভয়াবহতা দেখতে সিলেটের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে হেলিকপ্টারযোগে সিলেটের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন সরকারপ্রধান।
সিলেট পৌঁছার আগে হেলিকপ্টার থেকে নেত্রকোণা ও সুনামগঞ্জের দুর্গত এলাকা দেখবেন প্রধানমন্ত্রী।
আগেই প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং জানিয়েছে, সিলেটে যাওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি ‘লো ফ্লায়িং মোড’ বা নিচু হয়ে উড়বে, যাতে দুর্গত এলাকার অবস্থা প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট দেখতে পান।
সিলেটে পৌঁছে ওসমানী বিমানবন্দরে অবতরণ করবে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি। এরপর সেখান থেকে সিলেটের সার্কিট হাউসে যাওয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। বিভাগীয় ও জেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বন্যা দুর্গত এলাকায় নিয়ে আলোচনা ও দিক নির্দেশনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
সিলেট ও সুনামগঞ্জের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা। দুই জেলার প্রায় ৮০ শতাংশ এলাকা তলিয়ে গেছে পানিতে। সোমবার পর্যন্ত পানিবন্দি আছেন অন্তত ৪০ লাখ মানুষ। বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক।
কিছু প্রাণহানির ঘটনাও শোনা গেছে তবে বিদ্যুৎ, মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট না থাকার কারণে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। প্রশাসনের কাছেও সঠিক তথ্য নেই। এ সুযোগে প্রাণহানির সংখ্যা নিয়ে মনগড়া নানা তথ্য ভাইরাল হচ্ছে ফেসবুকে। এই বন্যায় দুই জেলায় অর্ধশত মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে নানা পোস্টে দাবি করা হচ্ছে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক একজনের ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তিনজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আর সুনামগঞ্জের ছাতকের নির্বাহী কর্মকর্তা জানিয়েছেন একজনের মৃত্যুর কথা। সে হিসাবে সোমবার পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রশাসনের তথ্য বলছে।
সিলেটে গত বুধবার বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বৃহস্পতিবার তা ভয়াবহ রূপ নেয়। সেদিন বিকেল থেকে দ্রুত বাড়তে শুরু করে পানি। তলিয়ে যায় সিলেট নগরের বেশির ভাগ এলাকা।
বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলা। এই দুই উপজেলার প্রায় পুরোটাই পানিতে তলিয়ে গেছে। সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কও পানির নিচে। পানির কারণে শুক্রবার বিকেলে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
দেশের প্রধান সব নদ-নদীর পানি সমতলে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় এই বৃদ্ধি অব্যাহত থাকার পূর্বাভাস রয়েছে। এখন পর্যন্ত বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে ১১টি জেলা। এসব এলাকায় ৯টি নদীর ১৯টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকলেও উত্তরের জেলাগুলোতে পরিস্থিতির অবনতি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। অতি ভারী বৃষ্টিপাতের প্রভাবে চট্টগ্রামসহ পার্বত্য তিন জেলার নদ-নদীর পানি সমতলে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিউসি) সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে।