বন্যার্ত মানুষের দুর্ভোগ কমাতে সরকার সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলমান বন্যা আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে বলেও আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন তিনি।
জাতীয় সংসদ ভবনে রোববার সন্ধ্যায় বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো সাক্ষাতে এলে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ তথ্য জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এবার বন্যার প্রকোপ একটু বেশি এবং তা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলতে পারে। প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করেই বাঁচতে হবে।’
জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আজ বিশ্ব শরণার্থী দিবস এবং বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন চায় জাপান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ লক্ষ্যে তার সরকার ভাষানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য উন্নত সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে।’
সরকার বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতকে পুঁজি করে কক্সবাজারকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চায় বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু সম্পর্কে তিনি জানান, ২০০১ সালের ৪ জুলাই তিনি প্রথম সেতুটির ভিত্তি স্থাপন করেন। পরবর্তীতে সেতুর কাজের অগ্রগতি না হওয়ায় আবার ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সরকার কাজ শেষ করেছে।
প্রধানমন্ত্রীর হাতে ‘১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জাপান সফর’ শীর্ষক ফটো অ্যালবাম তুলে দেন জাপানের রাষ্ট্রদূত। ছবি: পিএমও
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে জাপান সমর্থন দিয়ে আসছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাপানের বিশাল আর্থ-সামাজিক ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির ভক্ত ছিলেন।‘
রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো জানান, তার দেশ বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রাখবে।
তিনি আগামী নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জাপান সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, তার এই সফরে জাপান খুশি হবে।
এসময় প্রধানমন্ত্রীর হাতে একটি ফটো অ্যালবাম তুলে দেন ঢাকায় জাপানের দূত। এটির শিরোনাম ‘১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জাপান সফর’। জাপান-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এটি প্রকাশ হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, মেট্রোরেল উদ্বোধনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন তিনি।
আগামী বছর থেকে জাপানি কোম্পানিগুলো আড়াইহাজারে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাজ শুরু করবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি জানান, বাংলাদেশের পণ্য জাপানে ৯৮ শতাংশ শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার পেয়েছে।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটি দীর্ঘদিন সেনানিবাসে বন্দি ছিল।
প্রকাশ্যে বা গোপনে তারা (সামরিক শাসক) শাসন করেছে। আমরা গণতন্ত্রকে বন্দিদশা থেকে ফিরিয়ে এনেছি।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস উপস্থিত ছিলেন।