বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

উজান-ভাটি দু’দিক থেকেই পানি ঢুকছে হবিগঞ্জে

  •    
  • ২০ জুন, ২০২২ ২২:৫৬

হবিগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (অতিরক্তি) মিনহাজ আহমেদ শোভন জানান, প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১০ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। এতে শহর রক্ষা বাঁধ ঝুঁকিতে রয়েছে। ঝুঁকি এড়াতে বাঁধে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে।

সিলেট ও সুনাগঞ্জের বন্যার পানি কালনি-কুশিয়ারা দিয়ে নামছে হবিগঞ্জে। অন্যদিকে মেঘনা নদীর পানি বেড়েও বইছে উজানে। এতে উজান-ভাটি দু’দিক থেকেই হবিগঞ্জে ঢুকছে পানি। সেই সঙ্গে তীব্র হচ্ছে বন্যা পরিস্থিতিও। ইতোমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে জেলার আড়াই শ গ্রাম।

প্লাবিত ওই গ্রামগুলোতে পানিবন্দি কয়েক লাখ মানুষ এখন দুর্দশায় দিন কাটাচ্ছেন। অনেকেই আছেন অনাহারে।

হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসন বলছে, বানবাসীদের উদ্ধার তৎপরতা চলছে। সেই সঙ্গে খাদ্য সহায়তাও পাঠানো হচ্ছে।

গত তিনদিন ধরে বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছিল। কালনি-কুশিয়ারা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।

শনিবার কুশিয়ারা নদীর বাঁধ ডুবে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে এবং আজমিরীগঞ্জ ও নবীগঞ্জ উপজেলার বেশ কিছু নিচু এলাকা প্লাবিত হয়।

রোববার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। কুশিয়ারা নদীর বিভিন্ন অংশে দেখা দেয় ভাঙন। প্লাবিত হয় নতুন নতুন এলাকা। বিকেল থেকে সিলেট ও সুনাগঞ্জের পানি কুশিয়ারা দিয়ে নামতে থাকলে আজমিরীগঞ্জ, নবীগঞ্জ, বানিয়াচং ও লাখাই উপজেলার ২২টি ইউনিয়নরে অন্তত আড়াই শ গ্রাম পানিবন্দি হয়।

সোমবার সকাল থেকে দু’দিক থেকে হবিগঞ্জে পানি ঢুকতে শুরু করে। সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যার পানি কুশিয়ারা নদী দিয়ে হবিগঞ্জে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বদলপুর ও পৌর এলাকা দিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। অন্যদিকে, মেঘনা নদীর পানি উজান বয়ে আজমিরীগঞ্জের কাকাইলছেও এবং লাখাই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে প্রবেশ করছে।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, খোয়াই নদীর বাল্লা পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১২৯ সেন্টিমিটার ও শহরের মাছুলিয়া পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে শহর রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে রয়েছে। তাই শহরবাসীকে সতর্ক থাকার জন্য মাইকিং করা হয়েছে।

এ ছাড়া কালনি-কুশিয়ারার পানি আজমিরীগঞ্জ অংশে বিপৎসীমার ১৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (অতিরক্তি) মিনহাজ আহমেদ শোভন জানান, ‘পানি প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমনকি বৃষ্টি না হলেও পানি বেড়েই চলেছে।’

তিনি জানান, প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১০ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। এতে শহররক্ষা বাঁধ ঝুঁকিতে রয়েছে। ঝুঁকি এড়াতে বাঁধে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, বন্যা দুর্গতদের জন্য জেলায় ৯৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এরই মধ্যে প্রায় ৭ হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে শুকনো খাবার পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

এ ছাড়া জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের লোকজন উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, ‘উদ্ধার তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। অনেকে গবাদিপশু রেখে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে চাচ্ছে না। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে তাদেরকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে।’

এদিকে, সবচেয়ে বড় সংকট দেখা দিয়েছে গৃহপালিত পশুগুলোর। গরু-ছাগলগুলোকে উঁচু জায়গায় রাখা হলেও খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। আবার অসংখ্য গরু-ছাগলকে পানির মধ্যে বেঁধে রাখতেও দেখা গেছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পানি দ্রুত গতিতে বাড়ছে। তাই দ্রুত তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে প্রশাসনের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

এ বিভাগের আরো খবর