হাইওয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে কুষ্টিয়ায় মহাসড়ক অবরোধ করেছেন ভাড়ায় চালিত প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাসের চালকরা।
সোমবার দুপুরে কুষ্টিয়া হাইওয়ে থানার সামনে মহাসড়ক এক ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন চালকরা। এতে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে পাঁচ-ছয় কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়।দুপুর ১২টা থেকে হাইওয়ে থানার সামনে মহাসড়কে দাঁড়িয়ে পড়েন প্রায় ৩০০ প্রাইভেট কার-মাইক্রোবাসের চালক ও সহকারীরা। তারা পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও হয়রানির স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় বাস-ট্রাক ও অন্য যানবাহনের শ্রমিকরা অংশ নিলে প্রতিবাদ কর্মসূচি বিক্ষোভে রূপ নেয়।
চালকদের অভিযোগ, সব বৈধ কাগজপত্র থাকলেও কয়েকটি স্পটে গাড়ি দাঁড় করিয়ে প্রতিবার ৩০০ থেকে হাজার টাকা পর্যন্ত দাবি করে হাইওয়ে পুলিশ। না দিলে বিভিন্ন ধারায় মামলা দেয়।মাইক্রোবাসচালক সান্টু বলেন, ‘পুলিশ ধরে বলে হয় মামলা নেও, না হলে এক হাজার ৬ টাকা র্যাকার খরচ দাও। চালকরা কোনোমতে ৫০০ -৮০০ টাকা দিয়ে রক্ষা পান। গাড়ির সব কাগজ, ড্রাইভিং লাইসেন্স ঠিক থাকলেও কোনো লাভ নেই। সারা দিনে যা ভাড়া মারি তা পুলিশই নিয়ে নেয়। কীভাবে চাল কিনে বাঁচব।’
প্রাইভেট কারের চালক সোহাগ বলেন, ‘হাইওয়ে পুলিশ প্রতিদিন তাফালিং (অত্যাচার) করে। কাগজ ঠিক থাকলেও চাঁদা চায়। ৫০০ টাকা না দিলে ছাড়ে না।’ চালক বাদল বলেন, ‘সরকার আমাদের লাইসেন্স দিয়েছে। আমরা দেখালে হাইওয়ে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, কাগজ করার কী দরকার? আমাদের টাকা দিলেই তো হয়।’ প্রাইভেট কারের চালক সবুজ বলেন, ‘সামনে ঈদ বলে বোনাস দাবি করছে পুলিশ। তারা সিএনজি, অটোরিকশা থেকে গ্রুপ করে মাসিক টাকা তোলে। চালকরা পুলিশের টাকা দিতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে যাচ্ছেন।’ দুপুর ১টার দিকে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহ্বান জানালে চালকরা অবরোধ তুলে নেন। কুষ্টিয়া হাইওয়ে থানায় চালক ও জনপ্রতিনিধি নিয়ে বৈঠকে হয়রানি বন্ধের আশ্বাস দেন পুলিশ কর্মকর্তারা।বৈঠক থেকে বের হয়ে আলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, ‘হাইওয়ে পুলিশ রুটিন কাজের মধ্যে কিছু হয়রানিমূলক ঘটনা ঘটায়। এসব নিয়ে মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ ছিল। তারই বহিঃপ্রকাশ এই প্রতিবাদ কর্মসূচি। উভয়ের ভুল-বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে। পুলিশ ভবিষ্যতে হয়রানিমূলক আচরণ করবে না বলে কর্মকর্তারা আশ্বাস দিয়েছেন।’ চাঁদাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করেছে হাইওয়ে পুলিশ।
কুষ্টিয়া হাইওয়ে থানার ওসি ইদ্রিস আলী বলেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জ করেছি, একটা প্রমাণ দিতে বলেছি। চাঁদাবাজির প্রমাণ দিতে পারলে আমি রিজাইন দিয়ে যাব। আমরা গাড়ির কাগজ চেক করি। অবৈধ গাড়ি চলতে দিই না। এ কারণে আক্রোশে চালকরা এই প্রতিবাদ করেছেন।’
ওসি বলেন, ‘পুলিশের কোনো সদস্য হয়রানি করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করব।’