পদ্মা সেতু উদ্বোধন এবং জনসভাকে কেন্দ্র করে পদ্মাপাড়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। কেউ যেন কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য পুলিশ, র্যাব, গোয়েন্দা নজরদারির পাশাপাশি খোলা হবে পুলিশের কন্ট্রোল রুম। একই সঙ্গে পদ্মা সেতু উদ্বোধন এবং জনসভা সফল করতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সোমবার বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সভাপতিত্বে পদ্মা সেতু উদ্বোধনে নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে অনুষ্ঠিত সভায় নেয়া হয় এসব সিদ্ধান্ত।
সভার সিদ্ধান্তগুলো লিখিতভাবে গণমাধ্যমকে জানান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফ আহমেদ।
তিনি জানান, সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মন্ত্রিসভার সদস্য, বিশিষ্ট রাজনীতিক, কূটনীতিকদের অনুষ্ঠানে গমনাগমন ও অবস্থানকালীন নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পদ্মা সেতুর মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে বিভিন্ন অনুষ্ঠানস্থল ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পারস্পরিক সমন্বয় মাধ্যমে কাজ করবে। পদ্মা সেতুসংলগ্ন পদ্মা নদী ও পাশ্ববর্তী এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থাও নেয়া হবে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পদ্মা সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে শরীয়তপুরের জাজিরায় স্থাপন করা হয়েছে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা এবং মুন্সীগঞ্জ জেলার মাওয়া প্রান্তে স্থাপন করা হয়েছে পদ্মা সেতু উত্তর থানা। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থানা উদ্বোধন করবেন।
দুই প্রান্তে নিরাপত্তা সমন্বয় করার জন্য পুলিশ কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হবে। নৌ দুর্ঘটনা রোধে অনুষ্ঠানস্থলের চারপাশ দিয়ে পদ্মায় চলাচল করা নৌযান যেন ওভারলোড না নিয়ে চলে সেটা নিশ্চিত করা হবে। অনুষ্ঠানস্থলে পদ্মা নদীতে নৌ পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল থাকবে।
এ ছাড়া সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে আসা ও যাওয়ার সময় মহাসড়ক ও সংলগ্ন রাস্তার সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থা নিশ্চিত, অতিথি এবং জনগণের গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
অনুষ্ঠানস্থল বা এ বিষয়ে নাশকতা প্রতিরোধে গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি পর্যাপ্তসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবী থাকবে।
জরুরি সেবা যেমন, অ্যাম্বুলেন্স, প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা, পানি, মোবাইল টয়লেট ইত্যাদি ব্যবস্থা থাকবে বলেও জানানো হয়।
বৈঠকে জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন বলেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধনকে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতেই এই মিটিং। সেতুর দুই পারে ব্যাপক আয়োজন করা হয়েছে। সে আয়োজনকে ঘিরে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ, সাবেক নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, শরীয়তপুর, মুন্সীগঞ্জসহ পদ্মা সেতুর আশপাশের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতা, সিনিয়র সচিব, সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা, আইনশৃঙ্খলা, গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশ নেন।