বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) শওকত হাচানুর রহমান রিমনের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডার জেরে দল থেকে বহিষ্কার হওয়ার অভিযোগ করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা।
বামনা উপজেলা আওয়ামী লীগ থেকে শুক্রবার বহিষ্কার করা হয় গোলাম সাব্বির ফেরদৌস তালুকদার নামের ওই নেতাকে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে রোববার জানানো হয়, এমপিকে গালমন্দ করায় ফেরদৌসকে বহিষ্কার করা হয়, তবে বামনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফেরদৌস বলছেন ভিন্ন কথা।
তার অভিযোগ, শুক্রবার বিকেলে বামনা উপজেলা আওয়ামী লীগ পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যাওয়ার প্রস্তুতি সভা করে। সভায় তিনিসহ দলীয় নেতাকর্মীরা বরগুনা-২ আসনের তিন উপজেলার (পাথরঘাটা, বামনা ও বেতাগী) জন্য তিনটি লঞ্চের প্রস্তাব করেন। এমপি তিন উপজেলার জন্য দুটি লঞ্চ দেয়ার সিদ্ধান্ত দেন। এ নিয়ে এমপি ও তার মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। এরপরই দলীয় পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে বামনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইতুল ইসলাম লিটু মৃধা জানান, দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ ও বরগুনা-২ আসনের এমপি রিমনকে গালমন্দ করার অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় ফেরদৌসকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়।
এ নিয়ে ফেরদৌস তালুকদার বলেন, ‘এমপি রিমন কখনই আওয়ামী লীগবান্ধব না। দলীয় নেতাকর্মী থেকে তার কাছে জামায়াত-বিএনপির গুরুত্ব বেশি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভরা মজলিসে আমাকে অশ্রাব্য গালাগালিও শুরু করলেন তিনি। আবার তার নির্দেশেই করা হলো বহিষ্কার। কার কাছে বিচার চাইব?
‘জমি দখল, দলীয় নেতাকর্মীদের মারধর, বিভিন্ন সময় সাধারণ মানুষ ও নারীদের ফোন করে অশ্রাব্য গালাগালিসহ হুমকি-ধমকি দেয়া তো তার নিত্য অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।’
ওই সভায় উপস্থিত বামনা উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ফেরদৌস তালুকদার বামনার নেতাকর্মীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা একটি লঞ্চ দাবি করেছিলেন, কিন্তু এমপি রিমন রাজি ছিলেন না। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটি ও একপর্যায়ে এমপি রিমনের সঙ্গে তর্ক হয়। পরে সভাস্থল ত্যাগ করেন ফেরদৌস। এমপির সঙ্গে তর্কের জেরেই মূলত তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’
বিষয়টি জানতে বরগুনা-২ আসনের এমপি শওকত হাসানুর রহমান রিমন বলেন, ‘দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে ফেরদৌস তালুকদারকে বহিষ্কার করেছে বামনা উপজেলা আওয়ামী লীগ। এটা দলীয় সিদ্ধান্ত। এ বিষয়ে আমার কোনো হস্তক্ষেপ নেই।’
বাগ্বিতণ্ডা নিয়ে জানতে চাইলে এমপি রিমন বলেন, ‘প্রশ্নই আসে না। এটা তাদের নিজস্ব বিষয়। আমি তো দুটো লঞ্চের ব্যবস্থা করেই দিয়েছি।’
বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ‘কাউকে বাদ দেয়ার ক্ষমতা উপজেলা আওয়ামী লীগ তো দূরের কথা, জেলা আওয়ামী লীগও রাখে না। সে যদি এমপির সঙ্গে অশোভন আচরণ করে থাকে, তার বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’