তীব্র স্রোতে রাতে বন্ধ করে দেয়া শরীয়তপুরের শিমুলিয়া ও মাঝিরকান্দি রুটে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে।
স্রোতের তীব্রতা কমে আসায় সোমবার ভোর ৫টার দিকে ফেরি চলতে শুরু করে। রোববার রাত পৌনে ১০টায় আকস্মিক এ রুটে ফেরি বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. জামাল হোসেন নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘স্রোতের তীব্রতা আর বাতাসের গতিবেগ কিছুটা কমে আসায় ৫টার দিকে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় দুই শতাধিক গাড়ি পারের অপেক্ষায় রয়েছে।’
মাঝিরকান্দি ঘাট ব্যবস্থাপক মো. সালাউদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গেল এক সপ্তাহ ধরে পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে নদীতে তীব্র স্রোতের সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া পানির চাপে নদীর তলদেশে ঘূর্ণন সৃষ্টি হয়েছে। স্রোতের বিপরীতে ফেরি চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ।
‘বিশেষ করে রাতে ফেরি নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাই যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে রাত পৌনে ১০টায় ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। ঘাটে অপেক্ষমাণ যানবাহনকে বিকল্প সড়ক হিসেবে দৌলতদিয়া পাটুরিয়া নৌপথ ব্যবহার করতে অনুরোধ করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘সকালে স্রোত কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসায় দিনের আলোয় ফেরি চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ভোর ৫টায় শিমুলিয়া থেকে ফেরি কুঞ্জলতা লোড করে মাঝিরঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। সকাল ৬টার দিকে ফেরিটি মাঝিরঘাটে নোঙর করে।’
ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় মাঝিরঘাটে পারের অপেক্ষায় রয়েছে দুই শতাধিক যানবাহন। ১ নম্বর ঘাটের পন্টুনের সামনে থেকে শরীয়তপুর-মাঝিরঘাট সড়কে প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। রাতে ফেরি চলাচল বন্ধের ঘোষণায় অনেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে করে বিকল্প সড়কে গেলেও রাতভর অপেক্ষা করতে দেখা গেছে পণ্যবাহী যানবাহনকে। রাতে বৃষ্টিতে ভিজে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে আটকে পড়া যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের।
বরিশাল থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে পরিবারসহ মাঝিরঘাটে আটকা পরা ইলিয়াস ঢালী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রোববার বিকেলে ঘাটে এসেছি। রাতে কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ ফেরি বন্ধ করে দেয়া হয়। ওই রাতে পরিবার নিয়ে অন্য রুটে যাওয়ার সাহস পাইনি। সারা রাত রাস্তায় অপেক্ষায় থেকেছি। সকালে ফেরি চলাচল শুরু হলে ফেরিতে ওঠার সিরিয়াল পেয়েছি। সারা রাত পরিবার নিয়ে অনেক কষ্ট পোহাতে হয়েছে।’
শরীয়তপুরের গোসাইরহাট থেকে মাছ নিয়ে আটকা পড়া আকতার হোসেন বলেন, ‘সন্ধ্যায় ঘাটে আইয়া দেহি অনেক যানজট। তার ওপর রাইতে ফেরি বন্ধ কইরা রাখছিল। আগে জানলে এইহান দিয়া আইতাম না। সকালতোন আবার ফেরি চলতাছে। যেই যানজট তৈরি অইছে, তাতে কখন সিরিয়াল পাই কইতে পারি না। তাড়াতাড়ি পার হইতে না পারলে মাছ সব নষ্ট হইয়া যাইব।’
সকালে মাঝিরঘাটে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মেহেদী হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাতে ফেরি বন্ধ থাকায় দীর্ঘ সড়কজুড়ে যানবাহনের লাইন তৈরি হয়েছে। রাতে অনেক গাড়ি বিকল্প সড়কে চলে গেছে। ফেরি চলাচল স্বাভাবিক থাকলে দুপুরের মধ্যে ঘাট পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।’