বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে প্রলয়ংকারী বন্যায় ত্রাণ সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে ভারত।
রোববার নয়াদিল্লিতে ভারত-বাংলাদেশ জয়েন্ট কনসালটেটিভ কমিশনের সপ্তম রাউন্ড বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশে যে অভূতপূর্ব বন্যা হয়েছে তাতে আমাদের সংহতি জানাতে চাই।’
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ভয়াবহ বন্যার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি এই সুযোগে জানাতে চাই যে, যদি কোনো সুনির্দিষ্ট উপায়ে আমরা বন্যা এবং ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় আপনাদের সহায়তা করতে পারি, তাহলে আমরা খুব খুশি হবো। এটি আমাদের সম্পর্কের সঙ্গে মিল রেখে হবে।’
কোভিড-১৯ মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকে এটিই যৌথ কমিশনের প্রথম ব্যক্তিগত সভা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের যুগ্ম চেয়ারম্যান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
আলোচনায় মন্ত্রীরা সন্তোষ প্রকাশ করেন যে, কোভিড-১৯ মহামারীর চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও উভয় দেশ নিরাপত্তা ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে পারস্পরিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রবাহ সহ দ্বিপাক্ষিক প্রতিটি সেক্টরে আগের চেয়ে উন্নততরভাবে কাজ করেছে। দুই দেশের আঞ্চলিক বহুমুখী সংযোগ, বৃহত্তর বিদ্যুৎ এবং শক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা, উন্নয়নমূলক সহায়তা এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির বিনিময়, সাংস্কৃতিক এবং জনগণের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।
দুই মন্ত্রী অভিন্ন নদী ও পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, তথ্যপ্রযুক্তি ও সাইবার নিরাপত্তা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা, টেকসই বাণিজ্য, জলবায়ু পরিবর্তন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও জোরদার করতে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন।
দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের বক্তব্যে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের যৌথ আত্মত্যাগের ফলে জন্ম নেয়া উভয় পক্ষের উষ্ণতার কথাও স্মরণ করেন।
বৈঠক শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী এবং ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ বার্ষিকী- তিনটি যুগান্তকারী ঘটনাকে যৌথভাবে স্মরণ করতে ২০২১ সালে ভারতের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী উভয়ের বাংলাদেশ সফরের মধ্য দিয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার হয়েছে।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ভারত-বাংলাদেশ জয়েন্ট কনসাল্টেটিভ কমিশনের ৮ম রাউন্ড ২০২৩ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হবে।