আওয়ামী লীগ ২০৫০ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম।
রোববার সংসদ অধিবেশনে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে শেখ সেলিমের বক্তব্যের সময় সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও উপস্থিত ছিলেন।
শেখ সেলিম বলেন, ‘ওরা (বিএনপি নেতারা) বলে আওয়ামী লীগকে টেনে নামাবে। তোরা যত টানবি আমাদের ক্ষমতা তত বাড়বে। আমরা ৫০ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকব, ওরা থাকবে না।
‘আওয়ামী লীগ টানা আরম্ভ করছে ২০০৯ সাল থেকে। ২০২২ সাল পর্যন্ত এসেছি। আর একবার টান দিলে ২০৫০ সাল পর্যন্ত চলে যাব। আমরা ’৫০ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকব।’
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘দলটির নেতারা বলে, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে। শ্রীলঙ্কার মতো অবস্থা হলে ওরা খুশি হয়। আসলে ওরা তো বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানাতে চায়!
‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি অনেক মজবুত। আমেরিকা, ব্রিটেন, ইউরোপ, পাকিস্তান, ভারত দক্ষিণ এশিয়া সব দেশের চেয়ে আমাদের অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত। বাংলাদেশ কখনও শ্রীলঙ্কা হবে না, বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর হবে, মালয়েশিয়া হবে। যে প্রধানমন্ত্রী যেভাবে বাংলাদেশকে পরিচালিত করছেন এবং উন্নয়নের যে ধারা চলছে, তা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ হবে সুইজারল্যান্ড।’
শেখ সেলিম বলেন, ‘বিএনপি গণতন্ত্র আইনের শাসন মানবাধিকারের কথা বলে। ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুসহ শিশু-নারীকে হত্যা করেছে এবং বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ, জেল হত্যার বিচার বন্ধ করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করছে।
২২ হাজার যুদ্ধাপরাধী জেলে ছিল, তাদের বিচার হচ্ছিল। সেই ২২ হাজার ৫০০ যুদ্ধাপরাধীকে জিয়াউর রহমান মুক্ত করে দেয়। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার বন্ধ করতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ দিয়েছিল নিজেকে রক্ষা করার জন্য।
‘জিয়াউর রহমান সংবিধান স্থগিত করে সামরিক অধ্যাদেশ ফরমান দিয়ে দেশ পরিচালনা করেছে তাদের মুখে গণতন্ত্র? কীসের গণতন্ত্র? সামরিক গণতন্ত্র? এই দেশে আর কোনোদিন সামরিক জিয়াউর রহমানের গণতন্ত্র হবে না। বঙ্গবন্ধুকন্যা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন।’
বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক দাবির জবাবে শেখ সেলিম বলেন, ‘ওরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার, জাতীয় সরকারের কথা বলে। আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। বিশ্বের অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেমন নির্বাচন হয় বাংলাদেশেও সেইভাবেই নির্বাচন হবে।’
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে এক নম্বর নারী মুক্তিযোদ্ধা দাবি করারও সমালোচনা করেন সেলিম। বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় উনি ঢাকা ক্যান্টমেন্টে কর্নেল জানজুয়ার সঙ্গে ছিলেন। যে ৯৩ জন যুদ্ধাপরাধীর বিচার করার কথা ছিল, জানজুয়া তার মধ্যে একজন। জানজুয়া যখন মারা যায়, খালেদা জিয়া তখন প্রধানমন্ত্রী সেই জানজুয়াকে সমস্ত কূটনৈতিক নীতিনৈতিকতাবর্হিভূত হয়ে তাকে শোক প্রস্তাব পাঠায়।’
বন্যায় মানুষ কষ্ট পাচ্ছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বলেন, ‘সরকার চেষ্টা করছে। নেতাকর্মীদের সবাইকে বলব, বিপদ আসবে, আমাদের সবাইকে বিপদ মোকাবিলা করতে হবে।’