ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে দলে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের চাইতে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোকেই অগ্রাধিকার দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।
রোববার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সিলেট-সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় এক যৌথ সভার পর জাতীয় ত্রাণ কমিটির প্রধান স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব আমাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন যে, বন্যা পরিস্থিতির বিষয়ে আমরা যেন সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেই। সাংগঠনিক কাজকর্মের চাইতে এখন আমাদের একমাত্র অগ্রাধিকার বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের জন্য কাজ করা। এটা আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশ।
ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘সিলেট মহানগর, সুনামগঞ্জ পৌরসভা, ছাতকসহ বিভিন্ন এলাকায় আমাদের দলের নেতা-কর্মীরা রিলিফ অপারেশন শুরু করেছে। সিলেট থেকে এখন পর্যন্ত যে রিপোর্ট পেয়েছি আমরা ১০ হাজার লোকের কাছে খাবার পৌঁছে দিয়েছে। বড় বড় নৌকা ভাড়া করে পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেছে। সেখানে আমাদের শ খানেক নৌকা কাজ করছে।’
টুকু বলেন, ‘ছাতকে বন্যাকবলিত এলাকায় আমাদের নেতা-কর্মীরা নিজেরা টাকা তুলে ১০ লাখ তুলে মানুষের মাঝে বিতরণ করেছে। এভাবে বিএনপি গণমানুষের দল হিসেবে আমরা মানুষের পাশে আছি।’
বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় দলের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এবারের বন্যা পরিস্থিতিকে আমরা তিন ভাগে ভাগ করেছি। এখন যারা পানিবন্দি মানুষজন আছেন, তাদের উদ্ধার করে তাদের কাছে খাবার পৌঁছে দেয়া। বন্যার পানি চলে গেলে মানুষজনের গৃহনির্মাণ, তাদের খাবার ও ওষুধপত্র বিতরণ করবে।
‘কৃষিজমি তলিয়ে গেছে বন্যায়। যাতে পানি নেমে গেলে কৃষকরা চাষাবাদ করতে পারে সে জন্য বীজতলা তৈরি করে তাদের সরবরাহ করবে। ড্যাব ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন রোগবালাইয়ের চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ বিতরণ, বিশুদ্ধ পানির ট্যাবলেট বিতরণ করবে। আমরা চেষ্টা করব সকল বন্যার্তদের পাশে পৌঁছানোর।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে টুকু বলেন, ‘এই সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঘোষণা করে ২০ লাখ টাকা আর কয়েক লাখ টন চাল বরাদ্দ পেয়েছে সিলেটের জন্য। এটা আমি মনে করি যে জনগণের সঙ্গে ব্যঙ্গ করা। ব্যঙ্গ তারা করতেই পারে কারণ তাদের তো জনগণের ভোটের প্রয়োজন হয় না, জনগণের সেবা করারও প্রয়োজন হয় না। তাচ্ছিল্য করে তারা রিলিফ দিচ্ছে।’
সকল অঙ্গসংগঠনকে আলাদা আলাদাভাবে স্টিয়ারিং কমিটি করে প্রতিটি সংগঠনের ত্রাণ কার্যক্রম তদারিক করার সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান তিনি।
বৈঠকে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদ, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের অধ্যাপক হারুন আল রশিদ, অধ্যাপক আব্দুস সালাম, যুবদলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাইফ মাহমুদ জুয়েলও উপস্থিত ছিলেন।