এবি ব্যাংক থেকে ১৭৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের মামলায় জেলে পাঠানো মো. এরশাদ আলীকে কেন জামিন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে তার জন্য মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা রিপোর্ট আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে জমা করতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
রোববার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজহারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে এরশাদ আলীর পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী মমতাজ উদ্দিন ফকির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
এর আগে গত ১৭ মে তাকে জামিন না দিয়ে পুলিশে দিতে আদেশ দেয় হাইকোর্টের একই বেঞ্চ। পরে তাকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়। এরপর নিম্ন আদালত তাকে জেলে পাঠায়।
এরপর ফের স্বাস্থ্যের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে হাইকোর্টের এই বেঞ্চে জামিন আবেদন করেন তিনি। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করে।
মামলা থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ৮ জুন এরশাদ ব্রাদার্স করপোরেশনের মালিক রিকশাচালক থেকে হাজার কোটি টাকার মালিক হওয়া এরশাদ আলীর বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তার মালিকানাধীন এরশাদ গ্রুপ ভুয়া ব্যাংক গ্যারান্টিতে এবি ব্যাংকের ১৭৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে মামলাটি করা হয়েছে।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে এরশাদ ব্রাদার্স করপোরেশনের মালিক এরশাদ আলীকে।
এ ছাড়া এবি ব্যাংকের সাবেক এমডি মসিউর রহমান চৌধুরী ও শামীম আহমেদ চৌধুরী, সাবেক ইভিপি ও শাখা ম্যানেজার এ বি এম আবদুস সাত্তার, এভিপি ও রিলেশনশিপ ম্যানেজার আবদুর রহিম, এসভিপি ও সাবেক রিলেশনশিপ ম্যানেজার আনিসুর রহমান, ভিপি শহিদুল ইসলাম, এভিপি মো. রুহুল আমিন, ইভিপি এবং হেড অফ সিআরএম ওয়াসিকা আফরোজী, ভিপি, সিএমআরের সদস্য মুফতি মুস্তাফিজুর রহমান, সাবেক এসইভিপি ও হেড অফ সিআরএম সালমা আক্তার, এভিপি ও সিআরএম সদস্য এমারত হোসেন ফকির, সাবেক প্রিন্সিপাল অফিসার তৌহিদুল ইসলাম, এসভিপি ও সিআরএমের সদস্য শামীম এ মোরশেদ, ভিপি ও সিআরএমের সদস্য খন্দকার রাশেদ আনোয়ার, এভিপি ও সিআরএমের সদস্য সিরাজুল ইসলাম, সাবেক ভিপি ও ক্রেডিট কমিটির সদস্য মাহফুজ-উল ইসলাম।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে জাল কার্যাদেশ প্রস্তুত করে ছয়টি জাল কার্যাদেশের বিপরীতে ১৬৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।
এ ছাড়া মামলায় উল্লিখিত এবি ব্যাংক কাকরাইল শাখার কর্মকর্তারা প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন ছাড়া সাতটি অবৈধ ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে আরও ১০ কোটি টাকা ঋণ দেন। তা তুলে আত্মসাৎ করা হয়। সব মিলিয়ে আত্মসাৎ করা টাকার পরিমাণ ১৭৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা।