জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা) আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ চায় না৷
রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইভিএম যাচাইয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আয়োজিত বৈঠকে অংশ নিয়ে জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু দলীয় এই অবস্থানের কথা জানিয়েছেন।
এদিকে ইভিএম যাচাইয়ের এই বৈঠকে ১৩ রাজনৈতিক দলকে টেকনিক্যাল পারসনসহ আসার আমন্ত্রণ জানানো হলেও কোনো দলই তাদের পক্ষ থেকে প্রযুক্তিবিদ নিয়ে আলোচনায় অংশ নেয়নি।
আলোচনায় অংশ নিয়ে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘জাতীয় পার্টি ইভিএমের পক্ষে নয়। কারণ দেশের মানুষ এখনও ইভিএমে ভোট দেয়ার জন্য প্রস্তুত নয়।
‘দেশের মানুষ এখনও ইভিএম বিশ্বাস করে না। গ্রামগঞ্জের মানুষ এখনও মনে করে যে ইভিএম মানেই কারসাজি। কেউ কেউ মনে করে, কোনো একটি দলের স্বার্থে ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা হয়।’
জাপা মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের কাজ হচ্ছে নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে কাজ করা। আর কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে তা ভোটে অংশ নেয়া রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে নির্ধারণ করা উচিত। আবার কোনো কেন্দ্রে ব্যালট আর কোনো কেন্দ্রে ইভিএম- এভাবে ভোটগ্রহণ হলে খুব খারাপ অবস্থা সৃষ্টি হবে। ইভিএমের দোষ নয়, আসলে আমাদের দেশের মানুষ ইভিএমে ভোট দেয়ার জন্য প্রস্তুত নয়।’
বৈঠকের পর জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু সাংবাদিকদের বলেন, ‘রোববার সকালে প্রেসিডিয়াম সদস্যদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে- বিদ্যমান নির্বাচন ব্যবস্থার পক্ষেই তারা। ইভিএম ব্যবহারের কোনো প্রয়োজন নেই।’
দলীয় এই মতামত উপেক্ষা করে কোনো নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হলে সেই ভোট বর্জন করবেন কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘তা সময়ে দেখা যাবে। তখনকার সিদ্ধান্ত তখন নেব আমরা।’
ইভিএম যাচাই করার জন্য ৩৯টি রাজনৈতিক দলকে ধারাবাহিকভাবে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাদের মধ্যে রোববার ১৩টি দলকে আমন্ত্রণ জানায় ইসি। দলগুলো হলো জাতীয় পার্টি (জাপা), জাতীয় পার্টি-জেপি, কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি, জাকের পার্টি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, গণফোরাম, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম ও বাংলাদেশ কংগ্রেস।
এগুলোর মধ্যে আন্দালিব রহমান পার্থের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি, ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম ও কাদের সিদ্দিকীর কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগ বৈঠকে আসেনি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণে বড় আকারে ইভিএম ব্যবহার করতে চায় নির্বাচন কমিশন। তবে তার আগে সবার মতামত নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।
ইসির হাতে বর্তমানে ১ লাখ ৫৪ হাজার ইভিএম রয়েছে, যা দিয়ে সর্বোচ্চ ১০০ আসনে ভোট গ্রহণ করা সম্ভব।