বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

খালিয়াজুরীতে ইউএনও অফিস-হাসপাতালও আশ্রয়কেন্দ্র

  •    
  • ১৯ জুন, ২০২২ ১২:৪৮

ইউএনও এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘অবস্থা এমন পর্যায়ে গেছে যে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও আমরা আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছি। খালিয়াজুরী সদর ও আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি এবং সহায়-সম্পদ নিয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন। আমরা তাদের শুকনা খাবার সরবরাহ করছি।’

নেত্রকোণার হাওরদ্বীপ খালিয়াজুরী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। তবে কলমাকান্দা, মোহনগঞ্জ, বারহাট্টা, সদর, আটপাড়া ও মদন উপজেলার পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। দুর্গাপুর উপজেলার গ্রামগঞ্জ থেকে পানি নামতে শুরু করেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত ও খালিয়াজুরীর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সোমেশ্বরী, ধনু ও কংস নদীর পানিবৃদ্ধি অব্যাহত আছে বলে পাউবোর কর্মকর্তা এম এল সৈকত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, কলমাকান্দা পয়েন্টে সোমেশ্বরীর পানি বিপৎসীমার ১১২ সেন্টিমিটার, জারিয়া পয়েন্টে কংসের পানি বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার এবং খালিয়াজুরী পয়েন্টে ধনুর পানি বিপৎসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে দুর্গাপুর পয়েন্টে সোমেশ্বরীর পানি বিপৎসীমার ২৭৪ সেন্টিমিটার নিচে চলে এসেছে।

প্রশাসনের হিসাবে, খালিয়াজুরী উপজেলায় ৭০টি গ্রাম রয়েছে। প্রতিটি গ্রাম পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় রান্নাবান্না নিয়ে বিপাকে আছেন দুর্গতরা।

ইউএনও এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম জানান, ৭০টি গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। দুর্গত পরিবারগুলো সহায়-সম্পদ ও গবাদিপশু নিয়ে ৫২টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘অবস্থা এমন পর্যায়ে গেছে যে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও আমরা আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছি। খালিয়াজুরী সদর ও আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি এবং সহায়-সম্পদ নিয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন। আমরা তাদের শুকনা খাবার সরবরাহ করছি।’

খালিয়াজুরী ইউএনও অফিসের নিচতলায় গবাদি পশু। ছবি: নিউজবাংলা

এ উপজেলা সদরের বেশিরভাগ সরকারি অফিস এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আবাসিক ভবনগুলো বন্যা প্লাবিত হয়েছে বলেও জানান ইউএনও। তিনি বলেন, ‘আমার বাসার নিচতলায় কোমরপানি হয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন অফিসে ও হাসপাতাল ভবনে রাতযাপন করছেন।’

রোববার সকাল থেকে ১৩০ জন সেনাসদস্য উদ্ধার অভিযান ও ত্রাণ কাজে সহায়তা শুরু করেছেন বলেও জানান এই সরকারি কর্মকর্তা।

উপজেলার খলাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বিপ্লব সরকার বলেন, খলাপাড়া বাজারসহ এমন কোনো বাড়ি নেই যেখানে মানুষ পানিবন্দি হয়নি। রাস্তাঘাট অথৈ পানিতে ডুবে যাওয়ায় মানুষ ঘর থেকেই বের হতে পারছেন না। এ ছাড়া গ্রামের একটি মাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুর্গত মানুষের স্থান সংকুলান হচ্ছে না। রান্নাঘর ডুবে যাওয়ায় এবং লাকড়ি না থাকায় অনেকে রান্না পর্যন্ত করতে পারছেন না।

দুর্গতদের সহায়তায় সেনা তৎপরতা। ছবি: নিউজবাংলা

কলমাকান্দা, মোহনগঞ্জ, বারহাট্টা, আটপাড়া এবং মদন উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। কলমাকান্দা ও মোহনগঞ্জে কিছু কিছু এলাকা এখনও সম্পূর্ণভাবে পানিতে নিমজ্জিত। অনেকে বাসাবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে বা দূরের আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে চলে যাচ্ছেন।

ওই উপজেলা সদরের চানপুর রোডের বাসিন্দা শিক্ষক ঝুলন সরকার বলেন, ‘এ কয়দিন বাসায় থাকার চেষ্টা করেছি। এখন রান্নাবান্না করাই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাই আজ গ্রামের বাড়িতে চলে যাচ্ছি।’

দুর্গাপুরের গ্রামগঞ্জ থেকে বন্যার পানি সরতে শুরু করলেও পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে ভেসে উঠছে বন্যার ক্ষতচিহ্ন। বন্যার পানির তোড়ে ও স্রোতে বহু বাড়িঘর ভেঙে গেছে। নতুন করে নির্মাণ বা মেরামত ছাড়া অনেকের বাড়িঘরে ফেরা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর